
ছবিঃ সংগৃহীত
আসন্ন জুন মাসের মধ্যেই ছয় শ্রেণির দলিল চূড়ান্তভাবে বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে অবৈধ, জাল ও বিভ্রান্তিকর দলিলগুলো বাতিল করে জুলাই থেকে সারাদেশে বিডিএস বা ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
সূত্র মতে, দলিল স্ক্যান ও অনলাইনকরণের কার্যক্রম চলমান থাকলেও নির্দিষ্ট ছয় শ্রেণির দলিল স্ক্যান কিংবা ডিজিটাল রূপে রূপান্তর করা হবে না। কারণ এসব দলিল অনেক ক্ষেত্রে আইনি সীমাবদ্ধতা ও জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি হওয়ায় ভবিষ্যতেও বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
বাতিল হতে যাওয়া ছয় শ্রেণির দলিল
১. হেবা দলিল:
যেসব হেবা দলিলে প্রতারণা, জালিয়াতি বা অসুস্থ ব্যক্তিকে ব্যবহার করে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়েছে, সেগুলো বাতিলের আওতায় পড়বে। এছাড়া হেবা সম্পাদনে নির্ধারিত নিয়ম না মানা হলে দলিলটি অবৈধ বলে গণ্য হবে।
২. ওসিয়তনামা দলিল:
এক-তৃতীয়াংশ সীমা লঙ্ঘন করে বা নিজের ওয়ারিশদের মধ্যে কাউকে ওসিয়ত করার চেষ্টা করা হলে সেই দলিলও বাতিল বলে বিবেচিত হবে। পূর্বের ওসিয়ত বাতিল করে পরবর্তীতে নতুন ওসিয়ত থাকলে কেবল সর্বশেষটিই বৈধ থাকবে।
৩. রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল:
যেসব দলিল নিবন্ধন ছাড়া শুধুমাত্র মহুরীর মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে, তা স্ক্যান বা ডিজিটালকরণ হবে না এবং বাতিল বলে গণ্য হবে।
৪. জাল দলিল:
ভুয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি জাল দলিল চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে। জাল দলিল অনলাইনে যুক্ত হলে পরবর্তীতে বাতিল করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে সতর্ক করছে প্রশাসন।
৫. ক্ষমতার অপব্যবহারে অর্জিত দলিল:
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক সম্পত্তি রেকর্ড ও দখল করা ব্যক্তিদের দলিলও বাতিলের তালিকায় রয়েছে। ভুক্তভোগীরা চাইলে আইনি পদক্ষেপে মালিকানা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
৬. অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রির দলিল:
যেসব ক্ষেত্রে একজন ওয়ারিশ তার প্রকৃত অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রি করেছেন, সেই দলিল আংশিক বৈধ হলেও অতিরিক্ত অংশের দলিল বাতিল বলে বিবেচিত হবে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত ওয়ারিশ আদালতের মাধ্যমে নিজের অংশ ফেরত পেতে পারবেন।
সরকার জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে একদিকে যেমন জমি মালিকানায় স্বচ্ছতা আসবে, অন্যদিকে জালিয়াতির শিকার ভুক্তভোগীরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবেন। ভূমি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন ও অনলাইনকরণ নিশ্চিত করতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে চলেছে
ইমরান