ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পের হুমকির পরও রুশ তেল আমদানিতে অটল ভারত

প্রকাশিত: ১১:০১, ৩ আগস্ট ২০২৫

ট্রাম্পের হুমকির পরও রুশ তেল আমদানিতে অটল ভারত

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য হুমকির পরও নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছে ভারত। জ্বালানি নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বার্থের প্রশ্নে রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান জ্বালানি চুক্তি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে দেশটি।

নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দীর্ঘমেয়াদি তেল সরবরাহ চুক্তি রয়েছে, যা রাতারাতি বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। ট্রাম্পের বক্তব্য সত্ত্বেও নয়াদিল্লি তাদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

সম্প্রতি এক বক্তৃতায় ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে চলেছে। তবে তার বক্তব্যেই তিনি এ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নন বলে ইঙ্গিত দেন। ওই বক্তব্যে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করলে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপ করা হবে। এ ছাড়া রাশিয়া ও ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তবে ভারতের পক্ষ থেকে এসব মন্তব্য সরাসরি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বৈধভাবে এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালার আওতায় হচ্ছে। একজন বলেন, বর্তমানে রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ, যা মোট আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশ। এই নির্ভরতা হঠাৎ করে কমানো সম্ভব নয়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, জ্বালানির উৎস বেছে নেওয়া হয় বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায়। তার ভাষায়, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি স্বাধীন এবং সেটি অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপে নির্ধারিত হয় না।

রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, তেল রফতানিতে সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়নি। জি-৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ান তেলের জন্য একটি মূল্যসীমা নির্ধারণ করেছে, যেটি ভারত মেনে চলছে বলেও ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান।

এদিকে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির জবাবে রাশিয়াও কৌশলগত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মস্কো জানিয়েছে, তারা চাইলে কাস্পিয়ান অঞ্চল থেকে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে তেল সরবরাহকারী সিপিসি (CPC) পাইপলাইন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে পারে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে কয়েক মিলিয়ন ব্যারেল তেল সরবরাহ হয়, যা বৈশ্বিক জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৩.৫ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি এই সরবরাহ বন্ধ হয়, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলো বড় ধরনের জ্বালানি সংকটে পড়তে পারে।
 

সজিব

×