
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইরান এখন আগের চেয়ে অনেক বড় পরিসরে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে, তবে চারপাশের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে সরাসরি হামলা চালাতে পারে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির নির্দেশে দেশটির সামরিক বাহিনী মিসাইল ও অন্যান্য অস্ত্র প্রস্তুত রেখেছে। হামলার লক্ষ্য হতে পারে—মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানে অবস্থিত ঘাঁটিগুলোতে হামলার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে অন্তত ৩০টি সামরিক ট্যাংকার বিমান পাঠিয়েছে। এগুলো মূলত যুদ্ধবিমান ও বোমারু বিমানগুলোকে আকাশেই জ্বালানি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। ফ্লাইট রাডার তথ্য অনুযায়ী, এসব কেসি-১৩৫ মডেলের জ্বালানিবাহী বিমানের কয়েকটি ইতোমধ্যেই স্পেন, স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মার্কিন ঘাঁটিতে অবস্থান নিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিমানগুলো সম্ভাব্য ইরান অভিযানে ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের কাছাকাছি আনা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করতে চাপ দিচ্ছেন। ইসরাইলের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইরানের পাল্টা আঘাতের পর, এই অঞ্চলে যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনীভূত হয়েছে।
মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য মতে, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে, তবে ইরানের মিত্র ও প্রক্সি বাহিনী সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন ফ্রন্টে পাল্টা আক্রমণ চালাতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে ৪ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে। সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কায় মার্কিন প্রতিরক্ষা কমান্ডাররা এসব ঘাঁটিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউজে একটি জরুরি বৈঠক করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে যুদ্ধ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ সম্ভাব্য একটি ব্যাপক আঞ্চলিক যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে ওয়াশিংটনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর।
ছামিয়া