
ছবিঃ সংগৃহীত
২০২৫ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কানাডীয় পর্যটকদের সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানাচ্ছে কানাডার পরিসংখ্যান দপ্তর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনশিল্পের জন্য একটি বড় আর্থিক ধাক্কা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কানাডা থেকে সড়কপথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী পর্যটকের সংখ্যা ৩৮% কমেছে, যা সবচেয়ে বড় ভ্রমণ প্রবাহের অংশ। এছাড়া আকাশপথেও কানাডীয় পর্যটকের সংখ্যা কমেছে ২৪%।
এই ধারা চলতে থাকলে মার্কিন ভ্রমণ খাতে ২১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন (USTA)। সংস্থাটি জানিয়েছে, মাত্র ১০% পর্যটক কমলেও ২.১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয় এবং আতিথেয়তা খাতে প্রায় ১.৪ লক্ষ কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়ে। বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী ক্ষতি তার তিন থেকে চার গুণ হতে পারে।
এই পতনের পেছনে রাজনৈতিক কারণও রয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে “৫১তম রাজ্য” হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য দেন এবং কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। এর পরই তৎকালীন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে না যাওয়ার আহ্বান জানান। মে মাসে এক জরিপে দেখা যায়, ৭৫% কানাডীয় নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন।
তবে এর মানে এই নয় যে কানাডীয়রা ভ্রমণ করছেন না। বরং ৫৫% কানাডীয় এবার গ্রীষ্মকালে ভ্রমণ করবেন বলে জানিয়েছেন, যা ২০২৪ সালের তুলনায় বেশি। তাদের বেশিরভাগই নিজ দেশে বা অন্যান্য প্রদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন।
শুধু কানাডা থেকেই নয়, অন্যান্য দেশ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটন কমেছে। ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটক আগমনে ৯% হ্রাস এবং ৮.৫ বিলিয়ন ডলারের কম ব্যয় হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ট্যুরিজম ইকোনোমিকস। অথচ বছরটি ছিল পর্যটন খাতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশিত সময়।
পর্যটন খাতের বিপর্যয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মার্কেটিং বাজেটেও বড় কাটছাঁটের প্রস্তাব এসেছে। সিনেটের বাণিজ্য কমিটি ব্র্যান্ড ইউএসএ-এর বাজেট ১০০ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে মাত্র ২০ মিলিয়ন ডলার করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবকে "গভীর উদ্বেগজনক" বলে অভিহিত করেছে USTA।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন পর্যটন শিল্প যদি দ্রুত এই সংকট থেকে না বেরিয়ে আসে, তবে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে ব্যাপক হবে।
সূত্রঃ forbes.com
নোভা