
ছবি: সংগৃহীত
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির প্রধান কোচ পেপ গার্দিওলা বলেছেন, গাজায় শিশুদের হত্যার দৃশ্য দেখতে তার ‘শরীরজুড়ে যন্ত্রণা হয়’ এবং এই বর্বরতা তাকে ‘ভীষণভাবে বিচলিত’ করেছে।
সোমবার (১০ জুন) ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি গ্রহণের পর এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অন্যায়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে চুপ থাকাটা কোনো সমাধান নয়—বিশ্ববাসীর উচিত সরব হওয়া।’
গার্দিওলা বলেন, ‘গাজায় আমরা যা দেখছি, তা অসহনীয়। চার-পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের যখন বোমায় কিংবা হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপে মারা যেতে দেখি, তখন হয়তো মনে হয়—এটা আমাদের সমস্যা নয়। ঠিক আছে, হয়তো এটা সরাসরি আমাদের সমস্যা নয়। কিন্তু সাবধান—পরের বার এই বয়সী যে শিশুরা মরবে, তারা হতে পারে আমাদেরই।’
নিজের তিন সন্তান—মারিয়া, মারিয়াস ও ভ্যালেন্তিনার প্রসঙ্গ টেনে গার্দিওলা বলেন, ‘গাজায় দুঃস্বপ্ন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন সকালে যখন আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে দেখি, তখন গাজার শিশুদের কথা মনে পড়ে। ভয় লাগে—ভীষণ ভয়।’
উল্লেখ্য, গাজার ২৩ লাখ মানুষের প্রায় অর্ধেকই শিশু।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ১৭,৪০০ শিশু নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৫,৬০০ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। আরও বহু শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ করেছে, যাদের এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
বেঁচে থাকা শিশুদের অনেকেই একাধিক যুদ্ধের ট্রমা নিয়ে বেঁচে আছে, আর প্রতিটি শিশু বেড়ে উঠেছে ইসরায়েলি অবরোধের নিষ্ঠুর বাস্তবতায়।
গত ২০ মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক হামলায় গাজার অসংখ্য বাড়িঘর গুঁড়িয়ে গেছে, ধ্বংস হয়েছে বিদ্যালয়, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ সব ধরনের অবকাঠামো।
বিশ্বব্যাপী রাজনীতি ও ক্রীড়াজগত যখন অনেকটা নীরব, তখন গার্দিওলার মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের এই বার্তা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: আল জাজিরা।
রাকিব