ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দক্ষিণ গাজার ত্রাণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে ৬ জন নিহত 

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ৮ জুন ২০২৫

দক্ষিণ গাজার ত্রাণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে ৬ জন নিহত 

ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ গাজার একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ছয়জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা।

সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, শনিবার সকালে খাদ্যসামগ্রী নিতে লোকজন জড়ো হলে গুলির ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকজন ত্রাণকেন্দ্রের দিকে এগিয়ে গেলে ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায়।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘হুমকিস্বরূপ’ ঘনিষ্ঠভাবে এগিয়ে আসা সন্দেহভাজনদের লক্ষ্য করে সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে।

এই সপ্তাহে বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ত্রাণ নিতে গিয়ে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) জানায়, অতিরিক্ত ভিড় ও নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

GHF দাবি করে, শনিবার তারা হামাসের সরাসরি হুমকির কারণে খাদ্য বিতরণ করতে পারেনি, যদিও হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘ বলছে, এই নতুন ত্রাণ বিতরণ মডেল ফিলিস্তিনিদের ঝুঁকিতে ফেলছে এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহে যথেষ্ট নয়।

এদিকে, গাজা শহরের একটি আবাসিক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল ডিফেন্স, এবং বহু মানুষ ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘মুজাহিদিন ব্রিগেডস’ নামক একটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রধানকে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালায়। এই গোষ্ঠী ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগ করে ইসরায়েল, যেখানে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়।

সম্প্রতি রাফাহ এলাকায় এক অভিযানে থাই নাগরিক নাটাপং পিন্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যিনি ওই হামলার শিকার হয়েছিলেন।

GHF-এর বিতরণকেন্দ্র চালুর পর তিন দিনের মধ্যেই ৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি গুলিতে নিহত হন বলে জানায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা এর জন্য ইসরায়েলি সেনাদের দায়ী করেন।

ইসরায়েল বলছে, তারা প্রথম দুই দিন সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে এবং তৃতীয় দিনে ‘সন্দেহভাজনদের’ দিকে গুলি করেছে। এসব ঘটনার তদন্ত চলছে।

GHF গাজায় চারটি ত্রাণকেন্দ্র পরিচালনা করছে, যার মাধ্যমে ইসরায়েল জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা করছে। তবে জাতিসংঘ এই পদ্ধতিকে ‘অকেজো ও অনৈতিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে এবং বলেছে, তারা সব ত্রাণ সঠিকভাবে বিতরণ করছে।

প্রায় ২০ মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলমান। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪,৬৭৭ জনে পৌঁছেছে।

সূত্রঃ বিবিসি 

নোভা

×