
ছবি:সংগৃহীত
ইউক্রেন রাশিয়ার বিমান বাহিনীর উপর নজিরবিহীন এক অভিযান চালিয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে "স্পাইডারস ওয়েব অপারেশন"। মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা এই সুপরিকল্পিত হামলায় রাশিয়ার অন্তত ৪০টি কৌশলগত বোমারু বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ।
এই গোপন অভিযানের প্রস্তুতি চলেছে প্রায় ১৮ মাস ধরে। এসবিইউ জানায়, ছোট আকৃতির ড্রোনগুলো বিশেষভাবে তৈরি ট্রাকে লুকিয়ে ইউক্রেন থেকে পাচার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে পাঠানো হয়। এরপর সেগুলো রাশিয়ার চারটি ভিন্ন অঞ্চলে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে পৌঁছে দেয়া হয় এবং সেখানে টার্গেট করা হয় রাশিয়ার কৌশলগত বিমানঘাঁটিগুলো।
এসবিইউ-এর তথ্যমতে, অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে টিইউ-৯৫, টিইউ-২২ এবং টিইউ-১৬০—যেগুলো রাশিয়ার দূরপাল্লার হামলায় ব্যবহৃত হয়। ইউক্রেন দাবি করেছে, এই হামলায় রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার।
বিশ্বের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন গোয়েন্দা অভিযান?
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক সেরহি কুজান বলেন, "বিশ্বের ইতিহাসে এর আগে কোনো গোয়েন্দা সংস্থা এমন সুপরিকল্পিত ও জটিল অপারেশন পরিচালনা করেছে বলে জানা নেই। রাশিয়ার কৌশলগত বিমান বহরের মাত্র ১২০টি বিমানের মধ্যে ৪০টিতে আঘাত হেনেছে। এটি একটি বিশাল সাফল্য।"
বিশ্লেষকরা বলছেন, স্পাইডারস ওয়েব অপারেশন শুধু সামরিক সাফল্যের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়—এটি একটি শক্ত রাজনৈতিক বার্তাও বহন করে। ইউক্রেন কেবল রাশিয়াকেই নয়, বরং পশ্চিমা মিত্রদের দিকেও একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে।
সোভিয়েতস স্লাব খোমেনকো, একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বলেন, "আমেরিকানরা ভুল করে ধরেই নিয়েছে যে ইউক্রেন এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে হেরে গেছে। অথচ বাস্তবতা ভিন্ন। রাশিয়া ধীরে ধীরে দনবাস অঞ্চলে অগ্রসর হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ইউক্রেনের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়।"
এই হামলা ইউক্রেনের গোয়েন্দা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার একটি শক্ত প্রমাণ। এটি কেবল রাশিয়ার বিমান বাহিনীকে চাপে ফেলেনি, বরং পশ্চিমা সমর্থকদেরও মনে করিয়ে দিয়েছে যে যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি, এবং কিয়েভ এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে—চতুরতার সঙ্গে।
মারিয়া