ছবি: সংগৃহীত
গাজার রাফাহতে একটি সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ রবিবার জানিয়েছে। এই ঘটনায় হামাস ও ইসরায়েল পরস্পরকে দায়ী করছে, যার মধ্যেই যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পথে।
ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনারা স্থলপথে একটি ক্রেনের দিকে গুলি চালায়, যা এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করছিল। এরপর একটি ট্যাংক রাফাহর সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে আসা হাজারো মানুষের দিকে গুলিবর্ষণ করে। রয়টার্সের ফুটেজে আহতদের নাসের হাসপাতালে নেওয়ার দৃশ্য ধরা পড়েছে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের মেডিকেল টিম রাফাহতে ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং আরও ২৩ জন আহতের চিকিৎসা করেছে। গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামের মার্কিন সংস্থা এই সাহায্য বিতরণ কেন্দ্র পরিচালনা করছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নাসের হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৩১ জনের মরদেহ পৌঁছেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে গুলিবর্ষণের খবর তদন্ত করছে, তবে সামরিক গুলিতে কেউ আহত হয়েছে এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। জিএইচএফ দাবি করেছে, তাদের কেন্দ্রের কাছে কেউ নিহত বা আহত হয়নি এবং সব ধরনের সাহায্য বিতরণ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। সংস্থাটি হামাসের বিরুদ্ধে "মিথ্যা খবর" তৈরির অভিযোগ করেছে।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস বলেছে, ইসরায়েল সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে "মৃত্যুর ফাঁদ" বানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, "ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে সাহায্যকে 'যুদ্ধের অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহার করছে, যাতে ক্ষুধার্ত বেসামরিক নাগরিকদের শোষণ করা যায়।"
এদিকে যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রায় ভেস্তে যাওয়ার পথে। হামাস শনিবার জানিয়েছে, তারা মার্কিন-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে কিছু সংশোধন চায়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দূত এই প্রতিক্রিয়াকে "সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য" বলে আখ্যায়িত করেছেন। হামাস ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি hostage এবং ১৮ জন মৃতের দেহ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও যুদ্ধবন্ধ ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের শর্ত জোর দিয়ে চলেছে, যা ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলি হিসাবে, সেই হামলায় ১,২০০ নিহত এবং ২৫১ জন hostage হয়। ইসরায়েলের অভিযানে গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৫৪,০০০ ছাড়িয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। (রয়টার্স থেকে এমডি সাব্বিরের অনূদিত)
সাব্বির
