
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন শিক্ষার্থী মেঘা ভেমুরিকে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে (সমাবর্তন) নিষিদ্ধ করেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কাঁধে লাল কেফিয়াহ (ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের প্রতীক স্কার্ফ) পরে মেঘা ভেমুরি গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইসরাইলি সম্পর্কের বিরোধিতা করেন এবং সহপাঠীদের ইসরাইলবিরোধী প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। বক্তব্যে মেঘা বলেন, ‘এমআইটি একটি বিদেশি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গবেষণায় অংশ নিচ্ছে, সেটি হলো ইসরাইলি বাহিনী। এর অর্থ হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হামলায় শুধু আমাদের দেশ নয়, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও জড়িত।’
মেঘা আরো বলেন, ‘আমরা দেখছি, ইসরাইল কীভাবে ফিলিস্তিনকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চাইছে। এটা লজ্জার যে, এমআইটি এতে অংশীদার।’ ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে মেঘার বক্তৃতা ভাইরাল হয়ে যায়। কেউ কেউ সমর্থন করলেও অনেকেই সমালোচনায় মুখর হন। অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে মেঘা তার লিংকডইন প্রোফাইল মুছে ফেলেছেন।
এমআইটি এর চ্যান্সেলর মেলিসা নোবলস এক ইমেইলে মেঘাকে জানান, তিনি আর সমাবর্তনের স্টুডেন্ট মার্শাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং সমাবর্তন দিবসে ক্যাম্পাসে তার ও তার পরিবারের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইমেইলে বলা হয়, ‘আপনি বারবার অনুষ্ঠান আয়োজকদের ভুল পথে পরিচালিত করেছেন। যদিও আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করি, তবে আপনি যা করেছেন তা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘনের শামিল।’
জর্জিয়ার আলফারেটায় বড় হওয়া মেঘা ২০২১ সালে আলফারেটা হাই স্কুল থেকে পাশ করেন। এরপর এমআইটি-এ কম্পিউটার সায়েন্স, নিউরোসায়েন্স ও লিঙ্গুয়িস্টিকসে স্নাতক পড়াশোনা করেন। তিনি ‘Written Revolution’ নামের এক ছাত্রসংগঠনের সদস্য, যারা সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চিন্তাধারায় বিশ্বাসী।
মেঘার ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েল-গাজা সংকট ঘিরে ছাত্রপ্রতিবাদের ওপর চলমান কঠোর অবস্থানের একটি উদাহরণ। সম্প্রতি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিও একজন শিক্ষার্থীর ডিগ্রি আটকে দেয়, যিনি অনুমতি ছাড়া ফিলিস্তিনপন্থী বক্তব্য দিয়েছিলেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব