
ছবি: সংগৃহীত।
কোরবানির ঈদ মানেই ঘরে ঘরে মাংসের নানা রকমের রান্না ও খাবারের আয়োজন। তবে অতিরিক্ত ও ভুল উপায়ে মাংস খেলে ঈদের আনন্দ পরিণত হতে পারে অসুস্থতায়। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ঈদে মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চললেই থাকা যাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক।
চিকিৎসকরা বলছেন, একসঙ্গে বেশি মাংস খেলে হজমে সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, এমনকি পিত্তথলিতে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই দিনে দুই বেলার বেশি মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বিশেষ করে সকালের খাবারে ভারী মাংস না খাওয়াই ভালো।
গরুর মাংসে চর্বির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। যারা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য খাসির চেয়ে মুরগি বা মাছ ভালো বিকল্প হতে পারে। তবে খেতে হলে গরুর মাংসের চর্বিহীন অংশ বেছে নেওয়া উচিত।
মাংস রান্নায় অতিরিক্ত তেল, মসলা ও লবণ ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। তারা বলছেন, “ঝোল ঘন করতে তেল না দিয়ে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে মাংস সেদ্ধ করে গ্রিল বা ভুনা করে খাওয়াটা বেশি স্বাস্থ্যকর।”
মাংসের সঙ্গে উচ্চ আঁশযুক্ত সবজি যেমন লাউ, করলা, ঢেঁড়স, বরবটি, পালং শাক খেলে হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমায়। সালাদে লেবু, শসা, গাজর ইত্যাদি যোগ করে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে বলেন বিশেষজ্ঞরা।
ঈদের সময় মাংস খাওয়ার পাশাপাশি শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া খাওয়ার পরপরই না শুয়ে অন্তত ২০–৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলে হজমে উপকার পাওয়া যায়।
হৃদরোগী, ডায়াবেটিস রোগী, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনি সমস্যায় আক্রান্তদের মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
ঈদের উৎসব হোক আনন্দময়, কিন্তু স্বাস্থ্যের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। তাই খাওয়াদাওয়ায় ভারসাম্য বজায় রেখে, মাংসসহ অন্যান্য খাবার বেছে নিতে হবে সচেতনভাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “ঈদে খাওয়ার আনন্দ যেন পরিণত না হয় হাসপাতালে ভর্তিতে—সেদিকেই খেয়াল রাখতে হবে।”
মিরাজ খান