ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জাতিসংঘের বিশ্ব আদালতের প্রতিদ্বন্দ্বী গড়ছে চীন, হংকংয়ে চালু হচ্ছে IOMed

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৩:১৫, ৩০ মে ২০২৫

জাতিসংঘের বিশ্ব আদালতের প্রতিদ্বন্দ্বী গড়ছে চীন, হংকংয়ে চালু হচ্ছে IOMed

ছবিঃ সংগৃহীত

চীনের উদ্যোগে হংকংয়ে গঠিত হলো একটি নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা — আন্তর্জাতিক সালিসি সংস্থা (International Organisation for Mediation - IOMed), যা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (International Court of Justice - ICJ) প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছে বেইজিং।

চুক্তি স্বাক্ষর ও উদ্বোধন

শুক্রবার (৩০ মে), হংকংয়ে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সভাপতিত্বে IOMed প্রতিষ্ঠার কনভেনশন স্বাক্ষরিত হয়। এতে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, লাওস, কম্বোডিয়া ও সার্বিয়াসহ একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি জাতিসংঘসহ প্রায় ২০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

কী কাজ করবে IOMed

অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত একটি ভিডিওতে জানানো হয়, IOMed দেশ ও দেশের মধ্যে, একটি দেশের সঙ্গে অন্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তিতে সালিসি করবে।

চীনের রাষ্ট্রীয় পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস-এ প্রকাশিত একটি মতামত প্রতিবেদনে বলা হয়, IOMed হলো বিশ্বের প্রথম আন্তঃসরকারি আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থা যা একমাত্র সালিসির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে নিবেদিত।

হংকংয়ের জন্য নতুন সম্ভাবনা

হংকংয়ের মুখ্য নির্বাহী জন লি কা-চিউ বলেন, IOMed-এর মর্যাদা জাতিসংঘের আইসেজে (ICJ) ও পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন-এর সমমানের হবে। এটি হংকংয়ের জন্য “গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সুবিধা” ও কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দেবে বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে হংকংয়ের বিচার সচিব পল ল্যাম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এ লেখা এক মতামত লেখায় বলেন, IOMed হংকংয়ের ওপর “বহিরাগত বৈরী শক্তিগুলোর চাপ” মোকাবিলায় সহায়ক হবে। তিনি বলেন, “এক দেশ, দুই ব্যবস্থা” কাঠামোর অধীনে হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বৈধতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে IOMed একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হবে।

অবস্থান ও সময়সীমা

নতুন সংস্থার প্রধান কার্যালয় হংকংয়ের ওয়ান চাই এলাকায় একটি পুরনো পুলিশ স্টেশনে নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কিংবা ২০২৬ সালের শুরুতে এটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে হংকং চীনের অধীনে ফিরলেও গত এক দশকে বেইজিংয়ের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও গণতান্ত্রিক অধিকার সংকোচনের ফলে অঞ্চলটির আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে, চীন IOMed-এর মাধ্যমে হংকংকে আবারও একটি আন্তর্জাতিক আইনি ও কূটনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।

সূত্রঃ আল-জাজিরা 

নোভা

×