ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ঘেঁষা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমার জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মির মধ্যে আপাতত বিরতি বিরাজ করছে, রাজ্যের ভেতরের অংশে কৌশলগত গুরুত্বসম্পন্ন কিয়াকপিউ শহর ঘিরে চলছে তীব্র লড়াই।
ইরাবতী সংবাদ মাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, কিয়াকপিউ-রামরি সড়কের পাশে পিআইনসি কাই গ্রামসংলগ্ন অঞ্চলে জান্তা বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষ আরও ঘনীভূত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে শহর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত একটি সেনা সদর দপ্তর ঘিরে ফেলেছে সশস্ত্র সংগঠনটি।
গত কয়েকদিন ধরেই এই সংঘাত চলছে এবং এ সময় আরাকান আর্মির স্নাইপার হামলায় একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রাখাইনে কিয়াকপিউ শহরটি জান্তা সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শহরটিতে রয়েছে একটি সমুদ্রবন্দর, নৌঘাঁটি এবং একটি বিমানবন্দর—সব মিলিয়ে এটি সামরিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে অত্যন্ত কৌশলগত স্থান। শহরটি রক্ষায় সেনাবাহিনীর তিনটি শাখা—স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী—একযোগে অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
এছাড়া বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে নিযুক্ত চীনা বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে জান্তা বাহিনীকে ড্রোন হামলায় সহায়তা করছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি ইরাবতী। ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প থেকে চীনের অনেক কর্মী ও সংস্থা সরে যেতে বাধ্য হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। সম্প্রতি ২৬ জন রোহিঙ্গার একটি দল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার বরাবর দায়ের করা অভিযোগে দাবি করেছে, রাখাইনে আরাকান আর্মি হত্যা, ধর্ষণ এবং বঙ্গোপসাগর হয়ে মানব পাচারসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত। গোষ্ঠীটির নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
সংঘর্ষ এবং মানবাধিকার ইস্যুকে ঘিরে রাখাইন পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
সূত্র: https://short-link.me/-lmH
মিরাজ খান
