ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চীনা প্রেসিডেন্টের মেয়েকে বহিষ্কারের ডাক, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ৩১ মে ২০২৫

চীনা প্রেসিডেন্টের মেয়েকে বহিষ্কারের ডাক, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার আহ্বান

ছবি:সংগৃহীত


যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আইন ও চীনা প্রভাব নিয়ে চরম উত্তেজনার মধ্যেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের একমাত্র কন্যা শি মিংজেকে দেশ থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অতি-ডানপন্থী রাজনৈতিক ভাষ্যকার লরা লুমার। শনিবার (৩১ মে) এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

 

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে লুমার লিখেছেন, “এবার যাও। শি জিনপিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কার করো।” তিনি দাবি করেন, শি মিংজে ম্যাসাচুসেটসে থাকেন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তবে এসব দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। বরং পোস্টে তিনি মার্কিন সিনেটর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রার্থী মার্কো রুবিওকে ট্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, শি মিংজে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, এমন কোনো তথ্য জনসমক্ষে পাওয়া যায়নি। বরং মার্কিন সাময়িকী দ্য নিউ ইয়র্কার–এর ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, হার্ভার্ডে লেখাপড়া শেষে তিনি চীনে ফিরে যান। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিনি হার্ভার্ডে মনোবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং নিজের পরিচয় গোপন রাখতে একটি ভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন।

লুমারের এই মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উত্তপ্ত, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা খাত ও অভিবাসন নীতিতে চীনা প্রভাব নিয়ে ওয়াশিংটনে বিতর্ক তুঙ্গে। মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, চীনা শিক্ষার্থীরা কখনো কখনো কৌশলগত তথ্য বা গবেষণায় জড়িত থেকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছেন।

 

 

এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি সিনেটর মার্কো রুবিও ঘোষণা দিয়েছেন, যেসব চীনা শিক্ষার্থীর সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির যোগসূত্র রয়েছে বা যারা কৌশলগত অধ্যয়নে যুক্ত, তাদের ভিসা বাতিল করা শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র। তার এই ঘোষণার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত লক্ষ লক্ষ চীনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কারণ এ ধরনের নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে তা শুধু অভিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর নয়, মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার অভিযোগ এনেছিল। সে সময় বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালত একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।

এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন ভিসা নীতির এই পরিবর্তনের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। ওয়াশিংটনে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, শি মিংজে ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং চীনের খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী ও সোপ্রানো পেং লিউয়ানের একমাত্র সন্তান। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তথ্য খুবই সীমিত হলেও জানা যায়, ২০০৮ সালে সিচুয়ান ভূমিকম্পের পর তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন।

 

 

চলমান পরিস্থিতিতে শি মিংজের নাম আবারো আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির নতুন ধারার একটি প্রতীক হিসেবে, যদিও তার বর্তমান অবস্থান বা রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

আঁখি

×