ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খোয়াই নদীর জীর্ণ সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত: দুই যুগেও অবহেলিত চুনারুঘাটবাসী

আব্দুল্লাহ আল নোমান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, হবিগঞ্জ:

প্রকাশিত: ০২:৪০, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ০২:৪১, ২ জুন ২০২৫

খোয়াই নদীর জীর্ণ সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত: দুই যুগেও অবহেলিত চুনারুঘাটবাসী

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে খরস্রোতা খোয়াই নদী। এই নদীর পূর্ব পাড়ে রয়েছে চারটি ইউনিয়ন, যেখানে বসবাস করে প্রায় দেড় লাখ মানুষ। আর পশ্চিম পাড়ে ছয়টি ইউনিয়নে বসবাস করেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হলো খোয়াই নদীর ওপর নির্মিত একটি বেইলি সেতু। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সেতুটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

১৯৯৪ সালে নির্মিত এ বেইলি সেতুর আয়ুষ্কাল ছিল মাত্র ১২ বছর। অথচ এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৩০ বছর। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় গত ১৬ বছর ধরে সেতুটি ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেতুর অবস্থা এতটাই করুণ হয়ে উঠেছে যে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সেতুর দুই পাশে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না চালকরা। প্রতিদিন অসংখ্য ভারী যানবাহন এ সেতু দিয়ে চলাচল করছে, যার ফলে যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, এই সেতুর কোনো ধরনের মেরামত বা সংস্কার আজও করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চুনারুঘাট থেকে পরপর দুইজন মন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, এ এলাকার অনেকেই কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে উচ্চপর্যায়ে রয়েছেন, কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুর দিকে কারো নজর পড়েনি।

বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা ইসলাম চুনারুঘাট এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু এই অবকাঠামো সংকট নিয়ে তিনি এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। অথচ এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, তিনি যেন দ্রুত এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সেতুটি পুনর্নির্মাণ বা সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

চুনারুঘাটবাসীর ভাষায়, আমরা আজও ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছি। কখন যে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যায়, কেউ বলতে পারে না। এই সেতু আমাদের জীবন-রুট, এটি বন্ধ হয়ে গেলে পুরো উপজেলাই কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

এখনই সময়, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের। এলাকাবাসীর একটাই দাবি—নতুন ও টেকসই একটি সেতু দ্রুত নির্মাণ করা হোক, যাতে দুই পাড়ের প্রায় চার লাখ মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত হয়।

ফরিদ

×