চীনা বিনিয়োগ এখন যুদ্ধক্ষেত্র! কী হচ্ছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে?

বাংলাদেশের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তা ও সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে ফের উত্তেজনা বেড়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সংঘাত আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা স্থিমিত ছিল, তবে ভেতরে চলমান সহিংসতা ক্রমেই জটিল রূপ নিচ্ছে। বিশেষ করে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর কেয়াকফিউ দখলকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নতুন অস্থিরতা।

ইরাবতি সংবাদ মাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, কেয়াকফিউ-রামরি সড়কের পাশে পিআইনসি কাই গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির তীব্র সংঘর্ষ চলছে। শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সেনাবাহিনীর একটি সদর দপ্তর ঘিরে রেখেছে আরাকান আর্মি। এই অবস্থা জান্তার জন্য চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ সময় আরাকান আর্মির স্নাইপার হামলায় এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিহত* হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

কেয়াকফিউ শহরটি মিয়ানমারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে রয়েছে নৌঘাঁটি, সমুদ্রবন্দর ও একটি বিমানবন্দর। শহরটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে একযোগে মোতায়েন করেছে।

এদিকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পে নিযুক্ত চীনা বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে ড্রোন হামলায় মিয়ানমার জান্তাকে সহায়তা করছে, এমন অভিযোগ উঠেছে। যদিও এই অভিযোগের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে ইরাবতি। তবে সংঘাত তীব্র হওয়ায় চীনা প্রকল্পের কর্মীরা ওই এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

সংঘাতের পাশাপাশি আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগও উঠছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার বরাবর ২৬ জন রোহিঙ্গার একটি দল হত্যা, ধর্ষণ ও বঙ্গোপসাগরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করেছে। তারা আরাকান আর্মি এবং এর নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা* আরোপের আহ্বান জানিয়েছে।

রাখাইনে ক্রমাগত সংঘাত, বিদেশি স্বার্থ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অঞ্চলটির নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
 

সূত্র:https://youtu.be/9CMXFQT19RY?si=_pK0NSD2jJPmXqJg