
বিশ্বরাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্য। ড্রোন ঝড়ের মধ্যে ইউক্রেনের আকাশ যখন ধ্বংসের ঘনায়মান ছায়ায়, ঠিক তখনই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুতিনকে আখ্যা দিলেন ‘পুরোপুরি পাগল’ বলে। আর এতে কাঁপছে মস্কোর মাটি, আলোড়ন উঠেছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে।
ড্রোন হামলা ও মৃত্যুপুরী ইউক্রেন
গত রবিবার রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে চালায় রেকর্ডসংখ্যক ড্রোন হামলা। এতে নিহত হয় অন্তত ১৩ জন, যাদের মধ্যে আট, ১২ ও ১৭ বছরের শিশুও রয়েছে। কিয়েভজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, বাসিন্দারা দাঁড়িয়ে থাকেন ধ্বংসস্তূপের পাশে কান্নাজড়ানো চোখে।
ট্রাম্পের তীর্যক ভাষা
এই হামলার পরপরই ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশাল অ্যাকাউন্টে লেখেন “পুতিন পুরোপুরি উন্মাদ হয়ে গেছেন”। তিনি আরও বলেন, পুতিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক একসময় ভালো ছিল, কিন্তু এখন রুশ প্রেসিডেন্টের আচরণে এসেছে অস্বাভাবিক পরিবর্তন।
ট্রাম্পের অভিযোগ, পুতিন কেবল ইউক্রেনের একটি অঞ্চল নয়, পুরো দেশটাই দখল করতে চান। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন “যদি পুতিন এটা করেন, তবে তা রাশিয়ার পতনের পথকেই প্রশস্ত করবে”।
মস্কোর প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এ মন্তব্যে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আসে সংযত প্রতিক্রিয়া। মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “ট্রাম্প অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ”। তবে তিনি ধন্যবাদ জানান ট্রাম্পকে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার শুরুর সময় সহায়তা করার জন্য।
রাশিয়ার স্পষ্ট বার্তা সব কিছুই তারা নজরে রাখছে, তবে সতর্কভাবে।
জেলেনস্কি-ট্রাম্প দ্বন্দ্ব
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা পুতিনকে আরও সাহসী করে তুলছে। তিনি বলেন, “সত্যিকারের নিষেধাজ্ঞা ছাড়া রাশিয়ার আগ্রাসন থামবে না।”
অপরদিকে, ট্রাম্প জেলেনস্কির বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করে বলেন, “জেলেনস্কির মুখে যত কথা, সব যেন নতুন বিপর্যয় ডেকে আনে।”
বাক্যবাণ বনাম বাস্তব যুদ্ধ
একদিকে চলছে আকাশে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্রের যুদ্ধ, অন্যদিকে রাষ্ট্রপ্রধানদের সোশ্যাল মিডিয়া যুদ্ধ।
প্রশ্ন উঠছে এই বাকযুদ্ধ কি সত্যিই যুদ্ধ থামাবে, নাকি কেবল আরও উসকে দেবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে কথার আগুনই অনেক সময় বাস্তব আগুনের চেয়েও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে যখন নেতারাই ব্যারেলটিকে আগুনে ঠেলে দেন।
সায়মা