
ছবি: সংগৃহীত
মানব হাড় গুঁড়ো করে তৈরি ভয়ানক মাদক ‘কুশ’ বহনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন এক ব্রিটিশ যুবতী। এক সময়ের বিমানসেবিকা ২১ বছর বয়সী চার্লট মে লি এখন বন্দি অবস্থায় রয়েছেন শ্রীলঙ্কার উত্তরের এক কারাগারে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার লাগেজে ছিল ৪৫ কেজিরও বেশি এই নতুন ভয়ংকর সিনথেটিক ড্রাগ।
বিবিসি জানায়, দক্ষিণ লন্ডনের বাসিন্দা লিকে এ মাসের শুরুতে কলম্বোর বান্দারানায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করে শ্রীলঙ্কার কাস্টমস নারকোটিক্স কন্ট্রোল ইউনিট। সূত্র জানায়, এটি এয়ারপোর্টে ‘কুশ’-এর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চালান। আন্তর্জাতিক বাজারে এই মাদকের মূল্য প্রায় ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ২৮ কোটি টাকার কাছাকাছি।
তবে লি দাবি করেছেন, মাদকের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না। তার ভাষ্য, ‘আমি ভেবেছিলাম লাগেজে শুধুই আমার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র আছে। ওরা যখন আটকায়, কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। আমি জানি কে এটা লাগেজে রেখেছে, তবে নাম বলব না।’
তার আইনজীবী সামপথ পেরেরা জানিয়েছেন, তারা প্রতিদিন লির সঙ্গে দেখা করছেন এবং তার শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
জানা গেছে, থাইল্যান্ডে ৩০ দিনের ভিসা শেষ হয়ে যাওয়ার পর লি অপেক্ষাকৃত স্বল্পমেয়াদি সফরে শ্রীলঙ্কা যান। তার দাবি, শ্রীলঙ্কায় তার উদ্দেশ্য ছিল থাই ভিসা নবায়নের জন্য অপেক্ষা করা।
‘কুশ’ কী?
পশ্চিম আফ্রিকার সিয়েরা লিওনে উদ্ভূত ‘কুশ’ মূলত বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান এবং মানুষের হাড় গুঁড়ো করে তৈরি এক মরণঘাতী সিনথেটিক ড্রাগ। এটি গ্রহণ করলে দীর্ঘ সময় ধরে হিপনোটিক বা সম্মোহনী ঘোরে চলে যায় ব্যবহারকারী। সম্প্রতি এই মাদকের বিস্তার এতটাই বেড়েছে যে, চাহিদা মেটাতে কবর ভেঙে কঙ্কাল চুরি করছে চোরাকারবারিরা।
সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাডা বায়ো ইতোমধ্যে এই মাদকের ভয়াবহতা বিবেচনায় দেশজুড়ে ‘ড্রাগ জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন। মৃত্যুহার ক্রমেই বাড়ছে, তাই সরকার প্রতিটি জেলায় পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
এই মরণঘাতী সিনথেটিক ড্রাগ চোরাচালানের ঘটনায় অপরাধ প্রমাণিত হলে চার্লট মে লির ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব