
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি জাপানের প্রধান খাদ্যশস্য চালের দাম অনেক বেড়েছে। এমন পরিস্থিতির মাঝে চাল নিয়ে মন্তব্য করে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়েছেন জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু ইটোকে ।
কারণ তিনি রোববার এক রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে, তাঁকে কখনও চাল কিনতে হয়নি, কারণ সমর্থকদের কাছ থেকে উপহার হিসেবে তিনি চাল পেয়ে থাকেন। তাঁর এই মন্তব্য সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, যারা বর্তমানে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন।
কিয়োডো নিউজ প্রথম এই মন্তব্যের খবর প্রকাশ করলে দ্রুত অন্যান্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও তা ছড়িয়ে দেয়, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
সোমবার (১৯ মে) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এতো ক্ষমা চেয়ে বলেন, তিনি হয়ত ভুলভাবে কথাটি বলেছেন এবং উপস্থিত জনতাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য মন্তব্যটি বাড়িয়ে বলেছিলেন। তবে তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা, সে বিষয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু বলেননি।
সরকারি সম্প্রচার সংস্থা এনএইচকে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এতো মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলছিলেন যে, তাঁর কাছে এত চাল থাকে যে চাইলে বিক্রিও করতে পারেন।
তিনি বলেন, “আমি একটু আগেই স্ত্রীর কাছে ফোনে বকা খেলাম। আমরা দুজনেই থাকি, তাই সাধারণত আমাদের চালের অভাব হয় না, কিন্তু তিনি বললেন, চাল ফুরিয়ে গেলে তাকেই গিয়ে চাল কিনে আনতে হয়।”
তাকু ইটো’র মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায়, জাপানি ভোটারদের মধ্যে চাল একটি স্পর্শকাতর ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চকক্ষ নির্বাচনের আগে এটি প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবারের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য অশনিসঙ্কেত হতে পারে।
কিয়োডো নিউজ–এর রবিবার প্রকাশিত এক জনমত জরিপে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী ইশিবারের জনপ্রিয়তা রেকর্ড সর্বনিম্ন ২৭.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, এবং প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের ব্যর্থতায় অসন্তুষ্ট।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১১ মে পর্যন্ত সপ্তাহে চালের খুচরা দাম আবার বেড়ে যায় - যা ১৮ সপ্তাহ পর প্রথমবারের মতো কমার পর আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়। বর্তমানে চালের দাম এক বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত গরমে ফসলের ক্ষতি ও পর্যটকদের চাহিদা বৃদ্ধিকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
৫ কেজির একটি ব্যাগের চালের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৪,২৬৮ ইয়েন, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫৪ ইয়েন বেশি।
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার মার্চ মাস থেকে জরুরি মজুত চাল বাজারে ছাড়ছে, তবে তাতে কার্যত কোনো ফল আসেনি।
সূত্র: https://shorturl.at/Rbygc
মিরাজ খান