
তুরস্কে শান্তি আলোচনায় রুশ প্রতিনিধি দল
ইউক্রেনকে হুমকি দিয়ে রাশিয়া বলেছে, তারা কমপক্ষে আরও ২১ বছর যুদ্ধ করতে সক্ষম। তুরস্কের ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় রুশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বদানকারী ক্রেমলিনের সহযোগী ভøাদিমির মেডিনস্কি এমন কথা বলেন। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।
ভøাদিমির মেডিনস্কি বলেছেন, মস্কো শান্তি চায় কিন্তু যত দীর্ঘ সময় লাগবে লড়াই করবে। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলকে মেডিনস্কি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। তবে আমরা এক বছর, দুই বছর, তিন বছরÑ যত দীর্ঘ সময় লাগে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, আমরা ২১ বছর ধরে সুইডেনের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। উল্লেখ্য, রাশিয়া এবং সুইডেনের মধ্যে সংঘটিত গ্রেট নর্দান যুদ্ধ ১৭০০ থেকে ১৭২১ সাল পর্যন্ত পিটার দ্য গ্রেটের শাসনামলে ২১ বছর ধরে চলেছিল।
পুতিন এর আগে নিজেকে সাবেক রুশ সম্রাটের সঙ্গে তুলনা করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা ৯০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে চলে। আলোচনার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফলাফল ছিল যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের বিষয়ে একটি চুক্তি। চুক্তির আওতায় এক হাজার বন্দি সেনা বিনিময় করা হবে। তবে ইউক্রেন রাশিয়ার সমালোচনা করে বলেছে যে, তারা কিয়েভের বাহিনীকে চারটি অঞ্চল থেকে প্রত্যাহারের দাবি করেছে।
যখন ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দল চারটি অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার দাবির তীব্র প্রতিবাদ জানায় তখন রুশ আলোচকরা উত্তর দেন, পরের বার পাঁচটি হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের উদ্দেশে তুরস্কে দেশ দুটির বৈঠকের বিষয়টি কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় রয়েছে। তবে এতে দুদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ভøাদিমির পুতিন অংশ নেননি। ট্রাম্পও এ বৈঠকে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
পরোক্ষভাবে তিনি পুতিনকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুতিন সেখানে যেতে রাজি হননি। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার জানান, তার সঙ্গে পুতিনের দেখা হওয়ার আগে যুদ্ধবিরতি সফল হবে না। তুরস্কে আয়োজিত বৈঠক শেষ হওয়া মাত্রই পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থন জোগাড়ে আটঘাট বেঁধে নেমেছে ইউক্রেন।
রুশ প্রতিনিধিরা আলোচনাকে ইতিবাচক বললেও ইউক্রেনীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ার দাবি অগ্রহণযোগ্য এবং অবাস্তব। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতাদের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিন বছরের যুদ্ধে এই প্রথম সরাসরি আলোচনায় বসলো দুদেশ। ইউক্রেনের চাওয়া ছিল, অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হোক। তবে আলোচনা সে দিকে মোড় না নেওয়ায় এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন নিজে অংশগ্রহণ না করায় নাখোশ হয়েছেন জেলেনস্কি। তবে উভয় দেশ এক হাজার বন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে ঘটনাটি।