
ছবিঃ সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের সংকট ফিলিস্তিন ইস্যুতে এবার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন একটি গোপন পরিকল্পনার খবর সামনে এলো। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন গাজার প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
গাজা উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা অবরোধ ও হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২২ লাখ গাজাবাসী। তবুও নিজের মাতৃভূমি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গাজাবাসীদের জোর করে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আবারও ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গাজাবাসীদের লিবিয়ায় স্থানান্তরের প্রস্তাব সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। লিবিয়া সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত চুক্তি না হলেও, আলোচনা চলছে বলে দাবি করা হয়েছে। লিবিয়াকে রাজি করাতে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে জব্দ করে রাখা কয়েক কোটি ডলারের তহবিল ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবও বিবেচনায় রেখেছে।
পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য গাজাবাসীদের আর্থিক সহায়তা, বিনামূল্যে আবাসন এবং শিক্ষাবৃত্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনবিসি। তবে এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।
এই খবরের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা ছাড়ার সিদ্ধান্ত একান্তই গাজাবাসীদের নিজস্ব। বাইরে থেকে কেউ তা চাপিয়ে দিতে পারবে না। সংগঠনের দাবি, তারা জীবন দিয়ে হলেও মাতৃভূমির রক্ষা করবে।
এর আগেও ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের নামে ট্রাম্প গাজাবাসীদের অন্যান্য আরব দেশে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গাজা পুনর্গঠনের জন্য রিয়েল এস্টেট প্রকল্প এবং উন্নয়ন পরিকল্পনার আড়ালে গাজাবাসীদের বাস্তুচ্যুত করার চেষ্টা চালানো হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের প্রস্তাব বাস্তবায়নযোগ্য নয়। পশ্চিম লিবিয়ায় আব্দুল হামিদ দেইবেহ এবং পূর্বে খলিফা হাফতারের মধ্যে চলা ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও অস্থির পরিস্থিতিতে নতুন করে এত মানুষের স্থানান্তর শুধু অব্যবস্থাই বাড়াবে।
ওয়াশিংটনের এমন উদ্যোগ ইতোমধ্যে নিন্দার মুখে পড়েছে। আরব দেশগুলো এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠছে—গাজা সংকট সমাধানের নামে যুক্তরাষ্ট্র আসলে কী করছে?
ইমরান