ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘শান্তি’র জন্য ভারতকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ১৭ মে ২০২৫; আপডেট: ১৩:০১, ১৭ মে ২০২৫

‘শান্তি’র জন্য ভারতকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ

ছবি : সংগৃহীত

কাশ্মির, নদীর পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে ভারতকে বিস্তৃত সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। একইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক পথ পরিহার করে যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে তা দুই দেশের জন্যই সীমাহীন যন্ত্রণা ডেকে আনবে।”

ইসলামাবাদে ইয়োম-ই-তাশাকুর (ধন্যবাদজ্ঞাপন দিবস) উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেহবাজ বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী। কাশ্মির ও পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা শেষ হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সন্ত্রাসবাদ দমনে যৌথ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তান সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। এই সন্ত্রাসের কারণে আমরা হারিয়েছি ৯০ হাজার প্রাণ, অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।”

সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুস’-এর সাফল্য উদযাপন উপলক্ষে এই আয়োজন করে সেনাবাহিনী। এতে অংশ নেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির, এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ, মন্ত্রিসভার সদস্য, শহীদদের পরিবার এবং ক্রীড়া ও বিনোদন অঙ্গনের তারকারা।

শেহবাজ বলেন, “আমরা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি, তবে তারপরও আমরা শান্তি চাই। কারণ যদি কখনও পরমাণু শক্তিধর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার ১৬০ কোটিরও বেশি মানুষের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।”

গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী, যেটিকে লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

এই ঘটনার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সীমিত সামরিক অভিযান চালায়। পাকিস্তানের তথ্যমতে, এতে ৫১ জন নিহত হন। এর পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুস’ চালায়, যাতে ভারতের পক্ষের ২১ জন প্রাণ হারান বলে দাবি করা হয়েছে।

এই সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে ১০ মে থেকে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনও উত্তপ্ত। ভারত একাধিক কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর পাকিস্তানও আকাশসীমা বন্ধসহ পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সম্প্রতি পাঞ্জাব প্রদেশের কামরা এয়ারবেস সফরে গিয়ে শেহবাজ শরিফ পুনরায় ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানান। তবে ভারতীয় পক্ষ কাশ্মিরকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে পুনরায় অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে।

সূত্র - indianexpress.com/article/pakistan

সা/ই

×