
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে আগ্রহী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে। ব্রিটিশ সরকার অভিবাসন নীতিতে নতুন করে কঠোরতা আরোপ করছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে বিদেশি শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর। অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও নিয়ন্ত্রিত করতে এই পরিবর্তনগুলো আনা হচ্ছে।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সদ্য প্রকাশিত হোয়াইট পেপারে জানানো হয়েছে, বার্ষিক নিট অভিবাসন সংখ্যা এক লাখ কমানোই সরকারের মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
৬% টিউশন ফি লেভি
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি-র ওপর ৬ শতাংশ লেভি বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। “ইউনিভার্সিটিজ ইউকে”-এর তথ্য অনুযায়ী, এই লেভি থেকে বছরে আনুমানিক ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ড রাজস্ব সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। সরকারের দাবি, এতে করে অভিবাসনজনিত খরচ জনগণের উপর না চাপিয়ে সেইসব প্রতিষ্ঠান বহন করবে, যারা বিদেশি শিক্ষার্থী নিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়।
স্থায়ী বসবাসের সময়সীমা দ্বিগুণ
বর্তমানে, যুক্তরাজ্যে ৫ বছর বসবাস করার পর অভিবাসীরা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু নতুন নীতিতে এই সময়সীমা দ্বিগুণ করে ১০ বছর করা হয়েছে। The Times-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ প্রভাবিত হবেন এবং যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের হার কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গ্র্যাজুয়েট রুট ভিসার মেয়াদ কমছে
বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য থাকা দুই বছরের গ্র্যাজুয়েট রুট ভিসার মেয়াদ কমিয়ে ১৮ মাসে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এই ভিসায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যে থেকে চাকরি খুঁজতে পারেন। এখন থেকে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপযুক্ত চাকরি না পেলে তাদের যুক্তরাজ্য ছেড়ে যেতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্বেগ
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এই পরিবর্তন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ফি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাজস্বের বড় অংশ যোগান দেয়। নতুন এই পরিবর্তনে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান হুমকিতে পড়বে বলে মনে করছে তারা। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নতুনভাবে তাদের ভর্তি ও আর্থিক পরিকল্পনা সাজাতে হতে পারে।
সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো প্রয়োজনীয়। মন্ত্রীরা বলছেন, গ্র্যাজুয়েট রুটের অপব্যবহার করছে কিছু নিম্নমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, যারা যুক্তরাজ্যে থেকে গেলেও দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে না।
এই বছরের গ্রীষ্মে হোম অফিস থেকে প্রকাশ করা হবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট রুট ব্যবহার করছে।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “এখন সময় হয়েছে একটি আরও নিয়ন্ত্রিত ও উদ্দেশ্যপ্রবণ অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার, যা দেশের অর্থনীতি ও জনস্বার্থকে সেবা দেবে।”
ইমরান