ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসরায়েলকে বয়কট করে ফিলিস্তিনের পক্ষে একজোট ইতালি-স্পেন-জার্মানি!

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১৭ মে ২০২৫

ইসরায়েলকে বয়কট করে ফিলিস্তিনের পক্ষে একজোট ইতালি-স্পেন-জার্মানি!

ছ‌বি: সংগৃহীত

গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ও ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের পক্ষে একজোট হয়েছে ইউরোপের তিন প্রভাবশালী দেশ— ইতালি, স্পেন ও জার্মানি। মুসলিম বিশ্ব যখন সরব, আর পশ্চিমা দেশগুলোর সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত আন্দোলনে রাস্তায় নামছেন, তখন এতদিন নীরব থাকা ইউরোপের এই তিনটি দেশের সরকার অবশেষে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।

টাইমস অফ ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানসেজ পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে ইসরাইলকে প্রথমবারের মতো সরাসরি "গণহত্যাকারী রাষ্ট্র" হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, মাদ্রিদ এমন রাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না। যদিও স্পেনের বামপন্থী দলগুলো আগেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছে, তবে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে এ বক্তব্য এবারই প্রথম। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত বছর মে মাসে নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় স্পেন। এমনকি সম্প্রতি তেলআবিব থেকে অস্ত্র কেনার একটি চুক্তিও বাতিল করে দিয়েছে মাদ্রিদ সরকার।

গাজার মানবিক সংকটকে "অগ্রহণযোগ্য" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। পার্লামেন্টে এক ভাষণে তিনি জানান, গাজার পরিস্থিতি প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। যদিও ইতালির ডানপন্থী সরকার ঐতিহাসিকভাবে ইসরাইলপন্থী, তবে সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধাপরাধ, জিম্মি বিনিময়, যুদ্ধবিরতি এবং সীমান্ত অবরোধ ইস্যুতে তেলআবিবের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছে রোম। মেলোনি সরকারের দৃষ্টিতে, উপত্যকায় খাদ্য সংকটের কারণে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা এখন বাস্তব।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ এক বিবৃতিতে বলেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে এখনই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের রক্ষায় মানবিক সহায়তা আরও বাড়াতে হবে। তিনি জানান, বিশ্বের প্রতি এই অঞ্চলের মানুষদের প্রতি একটি মানবিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাঁর আশা, খুব শিগগিরই একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং জিম্মিরা ঘরে ফিরতে পারবে। তবে, হলোকাস্টের ইতিহাস-ভিত্তিক কারণে ইসরাইলের প্রতি এখনো কিছুটা নরম অবস্থানে রয়েছে বার্লিন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চলতি সপ্তাহে বার্লিন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ইসরায়েল সরকার গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রত্যাখ্যান করলেও, আইডিএফ এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, সীমান্ত অবরোধ না তুললে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি সর্বোচ্চ খারাপ অবস্থানে পৌঁছাতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্বনেতাদের বিবেক যেন জাগ্রত হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই কঠিন সময়ে সানসেজ, মেলোনি ও মার্জ কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=kPI4eJsHi-o

এম.কে.

×