
হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্রোগ অনেক সময় আগাম কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়ে হঠাৎ করেই আঘাত হানে। ইসিজি বা ইকোকার্ডিয়োগ্রাম করালেও সবসময় বিপদের আগাম বার্তা পাওয়া যায় না। তবে সাম্প্রতিক চিকিৎসা গবেষণায় উঠে এসেছে—দু’টি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাব্য ঝুঁকি বছরখানেক আগেই চিহ্নিত করা সম্ভব।
এই দুটি পরীক্ষার নাম হলো:
-
হিমোসিস্টিন ব্লাড টেস্ট
-
সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (সিআরপি) টেস্ট
হিমোসিস্টিন ব্লাড টেস্ট কী?
হিমোসিস্টিন এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা দেহে খাবার হজমের পর তৈরি হয়। সাধারণত ভিটামিন বি৬, বি১২ ও ফোলিক অ্যাসিডের সাহায্যে এটি ক্ষতিকর না হয়ে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু হিমোসিস্টিনের মাত্রা বেড়ে গেলে সেটি ধমনীতে জমা হয়ে প্লাক তৈরি করে, যা হার্ট ব্লকেজ ও অ্যাটাকের অন্যতম কারণ হতে পারে।
কারা এই পরীক্ষা করাবেন?
-
যাদের পরিবারে বংশগতভাবে হৃদ্রোগের ইতিহাস আছে
-
যাঁরা অতিরিক্ত ভাজা-মশলাদার খাবার খান
-
ধূমপান বা মদ্যপানে অভ্যস্ত
-
যাদের অটোইমিউন বা স্নায়ুর রোগ রয়েছে
সিআরপি (C-Reactive Protein) টেস্ট
সিআরপি হচ্ছে এক ধরনের প্রোটিন, যা শরীরে প্রদাহ থাকলে রক্তে বেড়ে যায়। এর উচ্চমাত্রা হৃদ্রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
সাধারণত সিআরপি-র মাত্রা ২ মিলিগ্রাম/লিটারের নিচে থাকাই নিরাপদ। তবে যদি তা ১০-১৫ মিলিগ্রাম/লিটারের বেশি হয়, তবে সেটি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের পূর্বাভাস হতে পারে।
এই টেস্টে এমনকি তিন বছর আগেই জানা সম্ভব—শরীরে হৃদ্রোগের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে কি না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “সাধারণ চেকআপে যেসব রক্ত পরীক্ষা করা হয়, তার বাইরেও এই দুইটি টেস্ট হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। সময়মতো পরীক্ষাটি করিয়ে ফেলা জীবন বাঁচাতে পারে।”
মিমিয়া