
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, কৃমি সাধারণত মানুষের পেটে হয়ে থাকে। তবে, ফুসফুসেও কৃমি থাকতে পারে, যা অনেকেই জানেন না। ফুড হাইজিন ঠিক না রাখলে পেটের কৃমি হয়ে থাকে, কিন্তু আপনি জানেন কি, এই কৃমির জীবনচক্রের কিছু অংশ ফুসফুসে হতে পারে?
বাচ্চাদের পেটে ব্যথা, বড়দের রক্তশূন্যতা, কিংবা নাড়ি পেঁচিয়ে যাওয়া—এ সব কৃমি রোগের সাধারণ উপসর্গ। তবে, ফুসফুসে কৃমির উপস্থিতি তাও দেখা যায়, যেটি অনেক সময় কাশি, শ্বাসকষ্ট, কফ বের হওয়া, বুকে ব্যথা, বা জ্বরের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে।
এখানে সবচেয়ে পরিচিত কৃমি, এসকারিস লুমনিপয়েড, যা ফুসফুসে তার জীবনচক্রের একটি অংশ পূর্ণ করে। এ ছাড়া, গোদ রোগের কারণেও কৃমি ফুসফুসে প্রবাহিত হতে পারে। কিউলেক্স মশার কামড় থেকে গোদ রোগ হয়, যার লার্ভা ফুসফুসে পৌঁছালে শ্বাসকষ্ট এবং কাশি হতে পারে। অনেক সময় রোগী হয়তো ভ্রান্তভাবে এজমা হিসেবে চিকিৎসা নেন, কিন্তু আসল সমস্যা ফুসফুসে কৃমির উপস্থিতি হতে পারে।
এছাড়া, কিছু কৃমি রোগের লক্ষণ ছাড়াই ফুসফুসে থাকতে পারে। যখন এক্সরে করা হয়, তখন দেখা যায় ফুসফুসে সিস্ট বা গুটি জমে গেছে, যা ধীরে ধীরে বড় হতে পারে। যদি সিস্টগুলো অপসারণ না করা হয়, তবে এটি ফুসফুসে পানি জমা, নিউমোনিয়া, বা বুকে ব্যথা তৈরি করতে পারে। সিস্টটির বৈজ্ঞানিক নাম হাইড্রাটিক সিস্ট, যা সাধারণত গরু বা খাসির মাংস ভালোভাবে রান্না না করলে হয়।
ফুসফুসের এই কৃমি রোগ প্রতিরোধের জন্য খাদ্য হাইজিন মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কাঁচা বা আধা রান্না মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এছাড়া, খাবারের আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং নিয়মিত কৃমির ওষুধ খাওয়া ফুসফুসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
এই রোগটি সাধারণত চিকিৎসকরা কম ডিল করেন, তাই বিশেষজ্ঞদের কাছে সঠিক পরীক্ষা ও চিকিৎসা করা অত্যন্ত জরুরি। এক্সরে, রক্ত পরীক্ষা ও ইতিহাসের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব। সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিয়ে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন এবং কাশিবিহীন সুস্থ জীবন উপভোগ করতে পারবেন।
আপনার শরীরের কোনো অংশে যদি ফুসফুসের কৃমি রোগের লক্ষণ থাকে, তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
রাজু