
ছবিঃ সংগৃহীত
বুকের ব্যথা হলে আমরা অনেকেই সেটাকে গ্যাসের ব্যথা বলে ভাবি। অথচ এটি হতে পারে প্রাণঘাতী হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। তবে কিভাবে বুঝবেন আপনার ব্যথাটা গ্যাসের, নাকি হার্ট অ্যাটাক? ডাক্তারি ভাষায় এই পার্থক্যটা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ উপসর্গ
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণ হলো বুকের ব্যথা। তবে এটি শুধু বাঁ পাশে হয় এমনটা নয়—সাধারণত বুকের মাঝখানে ভারী চাপ ধরা ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়, যেন বুকের ওপর ভারী কিছু বসে আছে। অনেক সময় রোগীরা বলেন, “বুকের মধ্যে একটা চাপ ধরা অস্বস্তি হচ্ছে।” সঙ্গে দেখা দিতে পারে—
-
হঠাৎ ঘাম হওয়া
-
শ্বাসকষ্ট
-
বুক ধরপর করা
-
পেট ভার লাগা বা ঢেকুর ওঠা
-
অ্যাংজাইটি বা অস্বস্তি
-
বাম হাত, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা
-
হালকা মাথা ঘোরা বা জ্ঞান হারানো
গ্যাসের ব্যথা ও হার্ট অ্যাটাকের মিল-ভেদ
হার্টের নিচের অংশে সমস্যা হলে ডায়াফ্রাম উত্তেজিত হয়, যার কারণে এপিগ্যাস্ট্রিক (পেটের ওপরের অংশ) অঞ্চলে গ্যাসের মতো অস্বস্তি তৈরি হয়। ফলে অনেকে এটি গ্যাস ভেবে ভুল করেন। আবার অনেক সময় খাওয়ার পর ব্যথা শুরু হওয়ায় একে হজমের সমস্যা বলে এড়িয়ে যান। এসব কারণেই অনেকে সময়মতো হাসপাতালে না গিয়ে বিপদ বাড়িয়ে তোলেন।
ডায়াবেটিস ও নারীদের ক্ষেত্রে লক্ষণ আলাদা?
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেকেই বা বয়স্ক নারীরা হার্ট অ্যাটাকের ক্লাসিক ব্যথা অনুভব করেন না। বরং হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, ঘাম হওয়া, দুর্বল লাগা বা অজ্ঞান হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। একে বলা হয় “এনজাইনা ইকুইভ্যালেন্ট।”
হাঁটলে শ্বাসকষ্ট? এটাও হতে পারে লক্ষণ
হাঁটাচলার সময় বুক ধরা, শ্বাসকষ্ট হওয়া এবং দাঁড়িয়ে পড়লে উপশম পাওয়া—এগুলো ‘এনজাইনা অন এক্সারশন’ এর লক্ষণ। এটি হার্ট ডিজিজের ক্রনিক লক্ষণ হতে পারে।
ঘনঘন জ্ঞান হারানো?
একটা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো হঠাৎ সাময়িক জ্ঞান হারানো (সিনকোপ)। এটি হয়ত কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়, আবার নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু এটা হার্টের বৈদ্যুতিক গোলযোগ বা ব্লকেজের লক্ষণ হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
যদি আপনি অনুভব করেন:
-
বুকের মাঝখানে চাপ ধরা ব্যথা হচ্ছে
-
শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে
-
হঠাৎ ঘাম হচ্ছিল বা মাথা ঘুরে পড়ছেন
-
পেটের উপরের অংশে অস্বস্তিকর ব্যথা হচ্ছে
... তাহলে দেরি না করে একজন কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নিন। গ্যাসের ওষুধ খেয়ে বসে না থেকে দ্রুত ECG বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে ফেলুন।
আপনার একটুখানি সচেতনতাই বাঁচাতে পারে একটি জীবন।
ইমরান