
ছবিঃ সংগৃহীত
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। বিশেষ করে ৪০ বছরের পর থেকে শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমতে শুরু করে। এই হরমোনটি মূলত পুরুষত্ব, যৌন সক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর ঘাটতির কারণে দেখা দিতে পারে কামবাসনা হ্রাস, লি’ঙ্গোত্থানে সমস্যা, খারাপ মেজাজ, স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা ও মানসিক অবসাদ।
তবে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে কিছু নির্দিষ্ট খাবার যোগ করলেই শরীরে টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক উৎপাদন বজায় রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু প্রাকৃতিক খাবারের কথা, যেগুলো ৪০ পেরোনোর পরও পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক কর্মক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করে—
🍯 মধু
মধুতে রয়েছে বোরোন নামের একটি খনিজ উপাদান, যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটি নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা ঠিক রেখে ধমনীকে প্রসারিত করে, যা যৌন সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
🐟 ফ্যাটি ফিশ
স্যালমন, সার্ডিন কিংবা রুই-কাতলার মতো ফ্যাটি ফিশে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর। এসব মাছ নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
🥬 বাঁধাকপি
বাঁধাকপিতে রয়েছে ইনডোল থ্রি-কার্বিনল নামক একটি উপাদান, যা স্ত্রী হরমোন ওয়েস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমিয়ে টেস্টোস্টেরনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে।
🌿 সবুজ শাকপাতা
শাকপাতা যেমন পালং, কলমি, লাল শাক ইত্যাদিতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়ামসহ গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিয়েট্রিয়েন্ট, যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
🧄 রসুন
রসুনে থাকা ‘আলিসিন’ যৌগ করটিসলের মাত্রা কমায়। করটিসল একটি মানসিক চাপ-জনিত হরমোন, যা টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেয়। ফলে রসুন মানসিক প্রশান্তির মাধ্যমে যৌন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
🍫 ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকলেটে রয়েছে কোকাও ও অন্যান্য ফ্ল্যাভানয়েডস, যেগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং টেস্টোস্টেরন নিঃসরণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
🥚 ডিম
ডিমে থাকে ওমেগা থ্রি, ভিটামিন ডি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কলেস্টেরল ও প্রোটিন— যেগুলো সরাসরি টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত।
🍌 কলা
কলা একদিকে শক্তির ভালো উৎস, অন্যদিকে এতে থাকা ব্রোমেলেইন এনজাইম হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
🦪 ঝিনুক
টেস্টোস্টেরনের জন্য জিংক অত্যন্ত জরুরি একটি খনিজ উপাদান। ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিংক, যা হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে। বিকল্প হিসেবে পনির বা চিজেও পাওয়া যায় এই উপাদান।
🍊 টকজাতীয় ফল
লেবু, কমলা, মাল্টা বা আনারসের মতো টকজাতীয় ফলে থাকে ভিটামিন এ ও সি, যা স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে পুরুষ হরমোনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এনে এবং খাদ্যাভ্যাসে উপযুক্ত খাবার যোগ করে সহজেই এই হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। তাই নিয়মিত এসব খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন— আপনার জৈবিক স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতা দুই-ই থাকবে অটুট।
আলীম