
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে কিছু ভিডিও ও পোস্ট, যেখানে বলা হচ্ছে, সানস্ক্রিন ও পারফিউমে থাকা কিছু রাসায়নিক উপাদান ক্যানসার ডেকে আনতে পারে। অনেকেই চিন্তিত—এই জনপ্রিয় স্কিনকেয়ার পণ্যগুলো ব্যবহার করলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এবং তার ফলে ক্যানসার হতে পারে।
বলা হচ্ছে, এই পণ্যগুলোতে কিছু “এন্ডোক্রাইন ডিসরাপ্টর” নামক উপাদান থাকে, যা শরীরের হরমোন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এতে করে স্তন ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসার বা জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে—এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ড. ডি এম মহাজন, দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, “এখনো পর্যন্ত কোনও বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ নেই যা বলছে সানস্ক্রিন বা পারফিউম সরাসরি ক্যানসার ঘটায় বা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।”
তিনি জানান, কয়েকটি সানস্ক্রিনে দুর্ঘটনাবশত বেঞ্জিন নামে একধরনের ক্যানসারসৃষ্টিকারী উপাদান পাওয়া গিয়েছিল। তবে তা বিরল এবং অজান্তে ঘটেছিল, এবং এসব দ্রুতই বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
কোন উপাদান নিয়ে বেশি বিতর্ক?
অক্সিবেনজোন ও অকটিনোক্সেট নামের উপাদানগুলো সানস্ক্রিনে থাকে। এগুলোর শরীরে প্রবেশ নিয়ে গবেষণা চলছে।
পারফিউমে থাকা কিছু উপাদান অস্পষ্ট, যার মধ্যে কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকতে পারে।
তাহলে কীভাবে নিরাপদ সানস্ক্রিন ও পারফিউম বাছবেন?
সানস্ক্রিনের ক্ষেত্রে:
- UVA ও UVB রশ্মি প্রতিরোধ করতে পারে এমন ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন নিন।
- SPF ৩০ বা তার বেশি বেছে নিন।
- জিঙ্ক অক্সাইড বা টাইটানিয়াম ডাই অক্সাইড যুক্ত মিনারেল বেসড সানস্ক্রিন নিরাপদ বলে ধরা হয়।
পারফিউমের ক্ষেত্রে:
- স্বচ্ছতা বজায় রাখে এমন ব্র্যান্ডের পণ্য নিন, যারা উপাদান খোলামেলা জানায়।
- “Fragrance” বা “Parfum” লেখা থাকলে সচেতন থাকুন, এই শব্দের আড়ালে বহু রাসায়নিক লুকানো থাকতে পারে।
- হাইপোঅ্যালার্জেনিক বা ফ্র্যাগ্রেন্স-ফ্রি পণ্য ব্যবহার করুন, বিশেষ করে যদি আপনি সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারী হন।
সানস্ক্রিন বা পারফিউম থেকে ক্যানসার হওয়ার বিষয়টি এখনো প্রমাণিত নয়। তবে সচেতন থেকে ভালো মানের, নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহার করলেই ঝুঁকি অনেকাংশে এড়ানো যায়।
মুমু ২