ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

প্রথম দেখা

শরিফুল রোমান

প্রকাশিত: ১১:৪১, ২০ জুন ২০২৫

প্রথম দেখা

প্রতীকী ছবি

শ্রাবনের কোন এক রাতে ডায়েরিটা কমল আমাকে দিয়েছিলো। তারপরে অনেক বছর অতিবাহিত হয়েছে। ভেবেছিলাম বিষয়টি ভুলে যাবো। পারলাম না। লেখাগুলো আমাকে তাড়া দিতে লাগলো। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আর কোন গল্প লিখবো না। কিন্তু বিন্দু সর্ম্পকে দিন দিন আমার কৌতুহল বাড়তে থাকে। আমি তাকে খুঁজতে শুরু করি।  
এক সময়ে আমি বিন্দুকে খুঁজে পাই। আপনারা নিশ্চয় বিশ্বাস করবেন- এই উপশহরে একজন বিন্দুকে খুঁজে বের করা অসম্ভব নয়। আর যদি সে হয় অনিন্দ্য সোন্দর্যের অধিকারী। মেয়েটিকে খুঁজে পাওয়ার পরে- আমার কি অনুভূতি হয়েছিলো তা না হয় পরেই বলছি। তার অগে না হয় কমলের ডায়েরির নির্বাচিত কয়েকটি পাতা উপস্থাপন করছি। আপনাদের আগেই বলে রাখছি- এমন ইমোশনাল লেখাগুলোর কোনটাই আমার নয়।
   তাহলে চলুন, প্রিয় পাঠক, কমল ও বিন্দুর কাহিনী বর্ননা করা যাক-

বিন্দু,
তুমি আমার কৈশোরিক অনুভূতি ফিরিয়ে দিয়েছো !  কতদিন এমন তীব্র অভিমান বোধ করিনা কারো জন্যে আমি !  কতকাল ধরে কারো সামান্য উপেক্ষাও আমার বুকের ভেতর এমন সুখের কষ্ট তৈরী করেনি! কতদিন! অথচ আমিতো অপেক্ষা করেছি কৈশোরিক অভিমানের জন্যে! সামান্য উপেক্ষায় বুক বিদীর্ণ হয়ে যাবার মতো কষ্টের জন্যে!  আর তুমি সেই সকল কিছু ফিরিয়ে এনেছো। কী যে এক ঘোর, এক মোহ এখন আমার মধ্যে তা কাউকে বোঝানো যাবে না। সারাবেলা অক্টোপাসের মতো সুখের কষ্ট আমাকে ঘিরে। একটু যদি উপেক্ষা টের পাই, তখন আমার ঠোঁট কিশোরের মতো কেঁপে ওঠে। বুকের মধ্যে এক অচেনা কষ্ট খুঁজে পাই। রাতে ফোন করে জানালে, আগামীকাল কলেজ ক্যাম্পাসে আমাদের দেখা হবে। কেন তুমি আসতে চাইলে অমন করে ?

সেদিন কাঁচের ওপর মেঘ ছিলো অথবা মেঘের নিচে জল ছিলো। তোমার আসার অপেক্ষায় আমি কলেজ গেটে দাঁড়িয়েছিলাম। ঠিক জলের নিচে, বৃষ্টিতে না ভিজে। মেঘ-জল-হাওয়া জড়াজড়ি করছিলো চারিদিকে। কলেজ গেটে একে একে অনেকগুলো রিক্সা এসে থামলো। রিক্সা থেকে অনেকেই নামছে। কিন্তু আমার চোখ যাকে দেখার অপেক্ষায় শুধু তাকে দেখছি না। রিক্সার অপেক্ষায় থেকে ভাবছিলাম, অচেনা তোমার কথা। তোমাকে তখনো তো আমি চিনি না মানে জানি না। কখনো তো তোমাকে আমি দেখিনি। টেলিফোনে আমাদের কথা হয়েছে।  

একটি ফোন নম্বর দিয়েছিলো আমার এক পরিচিতজন-নিজস্বজন। বলেছিলো, যেন যোগাযোগ করি। কথা বলেছিলাম, বলোতে কি বলেছিলাম?  এখন হয়তো তোমার মনে পড়ছে না কিছুই। এসব কথা ভাবতে ভাবতে আনমনা হয়ে পড়েছিলাম। কখন যে তুমি পাশে এসে দাঁড়িয়েছো দেখতে পাইনি। যখন দেখতে পেলাম, তখন সকাল ১১ টা বেজে ৪৫ মিনিট। এসেই বললে, ঈদের জন্যে কিছু কেনাকাটা করতে হবে। আমি যেন সঙ্গ দেই। 

আমার অবশ্য আগ্রহটা সে রকমই ছিলো। তবে কেন পাগলামিতে মেতে উঠলে?  কেনাকাটা ফেলে রেখে কফি হাউজে গিয়ে বসলে আমাকে নিয়ে। বয়কে দিয়ে এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট আনিয়ে দিলে।  আমি বলেছিলাম, মেয়েরা সিগারেট রূপক অর্থে তার প্রিয়তম মানুষকে দেয়। তুমি বললে- তা অবশ্য আমি জানি। তাহলে, কেন দিলে ?

তাহলে, আমি কি তোমার- প্রিয়তম মানুষ ? তুমি, আমাকে আটকে রাখলে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত। আচ্ছা, আমার না হয় কোন বাড়িতে কোন জবাবদিহিতা ছিলো না। তোমার তো ছিলো। 
বাড়িতে ফিরে আমার কোন কিছু ভালো লাগেনি।

মুমু

×