
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল একাধিকবার দাবি করেছে, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করতে চায়—কিন্তু কোনো বড় ধরনের পারমাণবিক বিপর্যয় যাতে না ঘটে, সেই চেষ্টাও করছে।
সম্প্রতি ইসরায়েল নাতাঞ্জ, ইসফাহান, আরাক ও তেহরানের বিভিন্ন স্থানে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এতে ইউরেনিয়াম রূপান্তর কেন্দ্র, সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র এবং ভারী পানি রিঅ্যাক্টরসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরাক, বা খোন্দাব নামে পরিচিত স্থানে ইসরায়েল গত বুধবার হামলা চালায়। আইএইএর মতে, এই রিঅ্যাক্টরটি চালু ছিল না, ফলে তাৎক্ষণিক বিকিরণজনিত কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে এটি প্লুটোনিয়াম উৎপাদনে সক্ষম, যা একটি পারমাণবিক বোমার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ইসরায়েল জানায়, তারা ইরানের উপসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রেও হামলা করেছে, তবে পরে এটি “ভুল বার্তা” বলে স্বীকার করে।
এই ঘোষণা উপসাগরীয় অঞ্চলে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, কারণ এই কেন্দ্র ঘিরে পারমাণবিক দূষণ হলে পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলই বিপর্যস্ত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন পর্যন্ত পারমাণবিক বিকিরণজনিত ঝুঁকি সীমিত। লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ব্রায়ান্ট বলছেন, “নাতাঞ্জ যেমন ভূগর্ভস্থ এবং আরাক চালু না, তাই তেমন বড় ধরনের বিকিরণজনিত ঝুঁকি আপাতত নেই।”
তবে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড (UF6) নামের এক যৌগ পানি বাষ্পের সংস্পর্শে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি করতে পারে।
বেশিরভাগ উপসাগরীয় দেশ—যেমন কাতার, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত—একশ শতাংশ খাবার পানির জন্য লবণমুক্ত পানির প্ল্যান্টের ওপর নির্ভর করে। পারমাণবিক দূষণ বা হামলা এসব প্ল্যান্ট ধ্বংস করলে তাৎক্ষণিকভাবে লাখ লাখ মানুষ বিশুদ্ধ পানি হারাতে পারেন।
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আবুধাবির পানি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক নিদাল হিলাল বলেন, “এমনকি একটি তেল দূষণ বা আক্রমণ এই প্ল্যান্টগুলোর কাজ বন্ধ করে দিতে পারে, যা মানবিক সংকট তৈরি করবে।”
মুমু ২