
ছবি: সংগৃহীত
স্পার্ম ডোনেশনের মাধ্যমে ১২ দেশে জন্ম নেওয়া সন্তানদের জন্য উইল, নিজের ছেলেমেয়ের জন্য ৩০ বছরের অপেক্ষা
বার্তা আদান-প্রদানের জনপ্রিয় অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও রাশিয়ান উদ্যোক্তা পাভেল ডুরোভ জানিয়েছেন, তার প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল সম্পদ তিনি ভাগ করে দেবেন নিজের ১০০ সন্তানকে—যারা বিশ্বের ১২টি দেশে স্পার্ম ডোনেশনের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে।
সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রভাবশালী সাময়িকী Le Point-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এসব সন্তান জন্ম নিয়েছে গত ১৫ বছরে। ডুরোভ বলেন, ‘আমি আমার সব সন্তানকে—প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া হোক বা ডোনেশনের মাধ্যমে—একইভাবে দেখি। তাদের জন্যই আমি উইল করে গেছি।’
তিনি জানান, তার ছয়টি সন্তান রয়েছে তিনজন আলাদা সঙ্গিনীর সঙ্গে। তবে উইলে তাদের সম্পদের অংশ দেওয়া হলেও, এই ছেলেমেয়েরা সরাসরি সম্পদ ভোগ করতে পারবে না অন্তত ৩০ বছর পর্যন্ত। ডুরোভের ভাষায়, ‘আমি চাই তারা নিজের জীবন নিজেরাই গড়ুক। উত্তরাধিকার নির্ভরশীলতা যেন তাদের অক্ষম করে না তোলে।’
কেন এত কম বয়সে উইল?
মাত্র ৪০ বছর বয়সে উইল করার কারণ সম্পর্কে পাভেল ডুরোভ বলেন, ‘আমি স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করি—এ ধরনের কাজ সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ। এতে করে অনেক শক্তিধর রাষ্ট্রেরও বিরাগভাজন হতে হয়। আমি চাই আমার মৃত্যুর পর যেন আমার সন্তানরা সুরক্ষিত থাকে এবং আমার প্রতিষ্ঠান টেলিগ্রাম কখনো তার মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হয়।’
টেলিগ্রামের ভবিষ্যৎ?
ডুরোভ নিশ্চিত করেছেন, তার মৃত্যুর পর টেলিগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব চলে যাবে একটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের হাতে। উদ্দেশ্য—ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা। তিনি বলেন, ‘টেলিগ্রাম বাণিজ্যিক চাপ কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে এগিয়ে যাবে—এটাই আমার প্রত্যাশা।’
মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় রাশিয়ান ক্রেমলিনের সঙ্গে বহুবার ডুরোভের সংঘাত হয়েছে। ফরাসি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ—টেলিগ্রাম অ্যাপে যৌন নির্যাতন ও মাদক কারবারের মতো অপরাধ সংগঠনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যদিও ডুরোভ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে যেমন ডুরোভের এই সিদ্ধান্ত চমকপ্রদ, অন্যদিকে তা বিতর্কও উসকে দিচ্ছে—বিশেষ করে উত্তরাধিকার প্রশ্নে আধুনিক পরিবার ও প্রযুক্তিবান্ধব সমাজব্যবস্থার ভাবনা কতদূর এগোচ্ছে, তার এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন পাভেল ডুরোভ।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব