
ছবি: সংগৃহীত
আমরা প্রায় সবাই কখনো না কখনো এ কাজটি করেছি—ঘুমাতে যাওয়ার আগমুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল, একটার পর একটা রিল দেখা, অথবা রাতের বেলায় মেসেজের উত্তর দেওয়া। কিন্তু এই অভ্যাস নিঃশব্দে আপনার শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ঘুমানোর আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ রাখলে যেসব উপকার পেতে পারেন, সেগুলো জানুন:
১. ঘুমের গুণমান উন্নত হয়
ফোনের স্ক্রিন থেকে বের হওয়া নীল আলো মেলাটোনিন হরমোনকে বাধাগ্রস্ত করে, যা আমাদের ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে। রাতে স্ক্রল বন্ধ করলে শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরাম পায় এবং দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া সহজ হয়। এতে গভীর, নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন ঘুম নিশ্চিত হয়। অতিরিক্ত নীল আলো দীর্ঘমেয়াদে অনিদ্রা, ক্লান্তি ও ঘুমচক্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
২. রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে
নিয়মিত ও মানসম্পন্ন ঘুম রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অপর্যাপ্ত ঘুম দীর্ঘমেয়াদে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের ঝুঁকি বাড়ায়। রাতে ফোন ছাড়া ঘুমানোর অভ্যাস করলে শরীর বেশি দক্ষতার সঙ্গে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসসহ মেটাবলিক রোগের ঝুঁকি কমে।
৩. মানসিক চাপ কমায়, মন ভালো করে
রাতে ফোন ব্যবহার আমাদের এমন কিছু তথ্যের মুখোমুখি করে যা স্ট্রেস বাড়ায় বা অন্যদের সঙ্গে তুলনামূলক চিন্তায় ফেলে। অতিরিক্ত উদ্দীপনা মানসিক অস্থিরতা তৈরি করে। রাতে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকলে নার্ভাস সিস্টেম শান্ত হয়, মনোসংযোগ বাড়ে এবং সকালে মানসিকভাবে সতেজভাবে জাগা যায়।
৪. চোখের চাপ ও মাথাব্যথা কমায়
অন্ধকারে ঘন্টার পর ঘন্টা স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা চোখে চাপ ফেলে, শুষ্কতা ও মাথাব্যথার কারণ হয়। ঘুমের আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ করলে চোখ বিশ্রাম পায় এবং দীর্ঘমেয়াদে চোখের আরাম ও স্বাস্থ্য রক্ষা হয়।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
রাতের বেলায় ফোনে সময় অতিবাহিত করে কম ঘুমালে খিদে নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন (ঘরেলিন ও লেপটিন) ভারসাম্য হারায়, ফলে উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত হলে মেটাবলিজম সঠিকভাবে কাজ করে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।
৬. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
গভীর ঘুমের সময় মস্তিষ্ক তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও স্মৃতির সংরক্ষণে কাজ করে। স্ক্রিনমুক্ত ঘুমের ফলে সকালবেলা মনোযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মানসিক দক্ষতা উন্নত হয়।
৭. হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়
রাত জেগে ফোনে সময় কাটানোর ফলে ঘুমহীনতা দেখা দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপ, দেহে প্রদাহ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিরবচ্ছিন্ন, ফোন-মুক্ত ঘুম হার্টের সুস্থ রিদম বজায় রাখে এবং হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
আবির