
ছবি: সংগৃহীত
ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাত পরিকল্পিতভাবেই উসকে দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, এমনটাই দাবি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মধ্যপ্রাচ্য স্টাডিজ ফোরাম’-এর পরিচালক শাহরাম আকবরজাদে।
তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু যুদ্ধ শুরু করেছেন একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে—যাতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনা ভেস্তে যায়।’
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে আল–জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আকবরজাদে বলেন, ‘নেতানিয়াহু জানতেন, এমনকি অন্য পর্যবেক্ষকরাও জানতেন যে, ইরান নিশ্চয়ই প্রতিক্রিয়া দেখাবে। আর ইরানের সেই প্রতিক্রিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রকে সংঘাতে জড়াতে কাজে লাগানোই ছিল নেতানিয়াহুর কৌশল।’
বিশ্লেষকের মতে, ইউরোপীয় দেশগুলোর উদ্বেগ—যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—এই কারণেই হয়তো এখনো হোয়াইট হাউস সরাসরি সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ‘একটি সুযোগ’ দেওয়া হচ্ছে।
তবে আকবরজাদে মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই এই যুদ্ধে যুক্ত, যদিও তা সরাসরি নয়। তার ভাষায়, ‘ইসরায়েলের সামরিক সরঞ্জামের বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহ করে। এমনকি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতেও যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দিচ্ছে।’
তার মতে, ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার সক্ষমতা কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই আছে, ফলে সেখানে আঘাত হানার পরিকল্পনা থাকলে ওয়াশিংটনের সরাসরি সামরিক অংশগ্রহণ প্রয়োজন হবে।
শুধু পারমাণবিক স্থাপনা নয়, নেতানিয়াহুর লক্ষ্য আরও গভীরে গেঁথে আছে বলেও মন্তব্য করেন এই গবেষক। ‘এখানে কেবল পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস করাই উদ্দেশ্য নয়’, বলেন আকবরজাদে। “নেতানিয়াহুর মূল এজেন্ডা হলো ইরানে ‘শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন’।”
বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি সংঘাতে জড়ায়, তাহলে শুধু পারমাণবিক আলোচনা নয়—পুরো মধ্যপ্রাচ্যেই নতুন অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে, যার জেরে বিশ্বজুড়ে কূটনীতি ও নিরাপত্তা ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা।
রাকিব