
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি ইসরাইলে অভিযান চালানোর পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ইরানের সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের ভূখণ্ডে এই শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি ঘোষণা দেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইরান।
সিজ্জিল নামটি নেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনের সূরা ফিল থেকে। সেখানে উল্লেখ আছে, আব্রাহার হস্তি বাহিনীর ওপর আবাবিল পাখির মাধ্যমে ছোঁড়া পাথর ‘সিজ্জিল’ নামে পরিচিত। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতীক হিসেবেই ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করা হয়েছে "সিজ্জিল"।
সিজ্জিল একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিচে তুলে ধরা হলো:
দুটি ধাপে গতি বৃদ্ধি: উৎক্ষেপণের পর এটি প্রথমে একটি ধাপে এবং পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে গতি সঞ্চার করে, যা শত্রু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে সহায়ক।
সলিড ফুয়েল প্রযুক্তি: এতে ব্যবহৃত হয় কঠিন জ্বালানি, যা দ্রুত উৎক্ষেপণ এবং দীর্ঘপথ অতিক্রমে সাহায্য করে।
দৈর্ঘ্য ও বিস্ফোরক ধারণক্ষমতা: ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ মিটার এবং এটি প্রায় ৭০০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে।
সর্বোচ্চ পাল্লা: আনুমানিক সর্বোচ্চ পাল্লা ২০০০ কিলোমিটার, যার ফলে দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতেও এটি আঘাত হানতে সক্ষম।
রাডার ফাঁকি দেওয়ার সক্ষমতা: সিজ্জিল রাডার ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নজর এড়িয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম।
সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প শুরু হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকের শেষভাগে। এটি ইরানের স্বল্পপাল্লার জিলজাল ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নির্মিত। তবে প্রযুক্তিগতভাবে এটি অনেক বেশি উন্নত ও পরিশীলিত।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাপের ফনার আকৃতি নিয়ে একটি মিসাইল দ্রুতগতিতে লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অনেকেই দাবি করেছেন, এটি ইরানের বহুল আলোচিত সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র।
ছামিয়া