
.
সঠিক বিসিএস প্রস্তুতির গাইডলাইনের অভাবে অসংখ্য পরীক্ষার্থী কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন না। স্বপ্নভঙ্গদের দলে না থাকতে চাইলে বিসিএস প্রস্তুতির একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে।
যেভাবে প্রস্তুতি শুরু করবেন
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে মাত্র ৫% থেকে ১০% প্রার্থীকে পাস করানো হয়। তাই এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে একটি গোছানো ও যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। কীভাবে নিবেন এই প্রস্তুতি-
সর্বপ্রথম পিএসসির বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসটি ভালো ভাবে আত্মস্থ করতে হবে। জব সলিউশন/প্রশ্ন ব্যাংক থেকে বিগত সালের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখতে হবে। যেসব বিষয়ভিত্তিক বিষয়ে আপনার দুর্বলতা আছে এবং যেগুলোতে বিশেষ দক্ষতা আছে সেগুলো চিহ্নিত করতে হবে। কোন বিষয়গুলো পড়তে হবে তা জানার পাশাপাশি কোনগুলো বাদ দিতে হবে এই সম্পর্কেও জানুন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টপিকগুলো আত্মস্থ করার জন্য একটি লিখিত রুটিন প্রস্তুত করুন। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বুকলিস্ট তৈরি করে নিন। ইংরেজি ও গণিত অংশে বিষদ প্রস্তুতি নিন। পড়ার পাশাপাশি নিজের প্রস্তুতিকে যাচাই করার জন্য বেশি বেশি মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিন। কার্যকরী কৌশলী উপায় অবলম্বন করুন, শর্টকাট পরিহার করুন। আগের পড়া বিষয়গুলোকে বার বার রিভিশন দিন। একই লক্ষ্যে অবিচল পরিশ্রমী ও সমমনা পরীক্ষার্থীদের সাথে স্টাডি গ্রুপ গঠন করে পরস্পরের সহযোগিতায় সমন্বিত ভাবে প্রস্তুতি নিন।
অনার্স থেকে প্রস্তুতি
ক্যারিয়ারের একমাত্র লক্ষ্য যদি বিসিএস ক্যাডার প্রাপ্তি হয়ে থাকে তাহলে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে ছাত্র জীবন থেকেই। বাংলাদেশের গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সেশন জট ও নানাবিধ জটিলতার কারনে অধিকাংশ স্বায়ত্তশাসিত ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনার্স বা সমমান পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করতে একজন শিক্ষার্থীর স্বাভাবিকের চেয়েও অনেক বেশি সময় লেগে যায়। যার ফলে দেখা যায় যে শিক্ষা জীবনের স্নাতক বা সমপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীর হাতে সবচেয়ে বেশি সময় থাকে। তাই অনার্সে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থীর বিসিএস প্রস্তুতি নেওয়ার উপযুক্ত সময় বলে বিবেচনা করা হয়। এই সময়টায় একজন শিক্ষার্থী যদি একটু একটু করে তাঁর বিসিএস ক্যাডার প্রাপ্তির লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায়, তাহলে এটা তাঁর জন্য সবচেয়ে বেশি সহজ হয়ে যায়। কারন শিক্ষাজীবন শেষ করে যদি কেউ বিসিএস এর প্রস্তুতি শুরু করে, তাঁদের জীবনে নানাবিধ প্রতিকূলতা দেখা যায়। সমাজ ও পরিবার থেকে দ্রুত কর্মজীবনে প্রবেশের তাগিদ, আর্থিক স্বাধীনতার অভাব, মানসিক বিপর্যয় ও হীনম্মন্যতা সহ নানাবিধ প্রতিকূলতার জন্য শিক্ষাজীবন শেষ করা একজন প্রার্থীর বিসিএস প্রস্তুতি অনেক বাধাগ্রস্থ হয়। অপরদিকে অনার্সে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থীর পারিপার্শ্বিক পরিস্থিত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁর অনুকূলে থাকে, বিধায় অনার্স জীবন থেকে বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করা প্রার্থীরা এই ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে।
এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এর পড়াশোনার সময়কালের সঙ্গে বেশি সময়ের পার্থক্য না থাকায় অনার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করার সময় মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া বিষয়গুলো বেশি মনে থাকার কারনে বিসিএস প্রস্তুতিতে একটু সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা আপনি চার বছরের অনার্স পাস হলেই জেনারেল ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি তিন বছরের পাস কোর্সে পড়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মাস্টার্স পাস হতে হবে। এছাড়া আপনার যদি অনার্স বা পাস কোর্সের পর মাস্টার্স পরীক্ষা সদ্যই শেষ হয়ে থাকে, তাহলে আপনি অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেট দিয়েও বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করতে পারেন। টেকনিক্যাল ক্যাডারে আবেদন করতে হলে আপনার নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতেই হবে। যেমন এমবিবিএস ডিগ্রি না থাকলে আপনি ডাক্তার হিসাবে সরকারি চাকরি করতে পারবেন না। এছাড়া অন্যান্য যোগ্যতা বিপিএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নির্ধারিত হয়ে থাকে।
চাকরি বাজার ডেস্ক
প্যানেল