
ফরিদগঞ্জ রূপসা জমিদার বাড়ি
স্থলে ও জলে ভরপুর চাঁদপুর। নদী আর ইলিশ এই জেলার সুনাম ও সুখ্যাতি ছড়িয়েছে দেশ-বিদেশে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রূপালি ইলিশের স্বাদ নিতে অনেকেই ছুটে আসেন এই শহরে। বিনোদন কেন্দ্র বলতে শহরের মোলহেড তিন নদীর মোহনা। যে কারণে ইলিশের স্বাদ নিতে এসে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসেন পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল তিন নদীর মোহনায়। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য না দেখলে চাঁদপুর ভ্রমণই অনেকটা বৃথা। এই স্থানটিকে আরও নান্দনিক করে গড় তোলার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগ। ইতোমধ্যে বেশকিছু সংস্কার হয়েছে এবং এই স্থানে ভাসমান হকরাদের উচ্ছে করে পরিবেশ আরও মনোরম করা হয়েছে। আসুন আমরা তিন নদীর মোহনা ভ্রমণ পিপাসুরা কেন এত আকৃষ্ট করে জেনে নেই...।
২০১৭ সালে চাঁদপুরকে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ নামে। রাজধানী থেকে চাঁদপুরের দুরুত্ব ১৬৬ কিলোমিটার। নদী পথে আরও কম হবে। যে কারণে ভ্রমণপিপাসু লোকজন চাঁদপুরে বিলাসবহুল লঞ্চে এই জেলায় বেশি আসেন। জেলার প্রায় ২৮ কোটিরও বেশি মানুষের জন্য একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে তিন নদীর মোহনা। এছাড়াও ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পার্ক গড়ে উঠেছে। তবে সংখ্যায় খুবই কম। শুধু ভ্রমণই নয়, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাও অনেকটা শহর কেন্দ্রিক। উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে অনেক মনোরম এলাকা থাকলেও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে গড়ে উঠেনি। জেলার শাহরাস্তি উপজেলার বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ। কাজের ফাঁকে সময় পেলেও তিনি ছুটে আসেন তিন নদীর মোহনায়। তিনি জানান, প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য আসি। এখানে আসার ভলোলাগাটা অসাধারণ। মনের মধ্যে অনেকটা শান্তির পরশ বয়ে যায়। এখানকার নিরিবিলি পরিবেশে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে আসলে আরও ভালো সময় কাটে। স্পিডবোট, নৌকা ও ট্রলার দিয়ে নদী ভ্রমণটাও হয়। রাতের দৃশ্য আরও চমৎকার। কারণ পূর্ণিমার চাঁদের আলো যখন পানিতে পড়ে, তখনকার পানির রূপালি দৃশ্য যে কোনো মানুষের মনে দাগ কাটবে। ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রিফাত কান্দি সেন। তিনি বলেন, পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল হচ্ছে তিন নদীর মোহনা। মোহনার দৃশ্য যে কোনো ভ্রমণপিপাসু ব্যক্তিকে আকৃষ্ট করে। কারণ এই স্থানের সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা ও রাতে দৃশ্য ভিন্ন ভিন্ন। এক সময় একেক রূপ ধারণ করে। বিশেষ করে সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায় খুবই চমৎকার করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শীতকালীন পরিবেশ, বর্ষা মৌসুম বৃষ্টির সময়টা নানাভাবে উপভোগ করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বিশেষ করে সাঁতার না জানা ব্যক্তিদের নদী ভ্রমণের সময় সতর্ক থাকতে হয়। শহরের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. আলম জানান, মূলত তিন নদীর মোহনা অনেক দুর্ঘটনারও ইতিহাস হয়ে আছে। বিশেষ করে নৌদুর্ঘটনা। তিন নদীর মিলনস্থলটিতে পানির যে ঘূর্ণি স্রোত তৈরি হয়, তা খুবই ভয়ঙ্কর। অনেকে এটাকে রহস্যময় মৃত্যুকূপও বলেন। কারণ ছোট খাট বহু নৌযান এখানে তলিয়ে গেছে। অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন। এর রহস্য কেউ বলতে পারে না। মোহনায় বসে অনেকেই এর দৃশ্য খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পানির ঘূর্ণায়ন বড় আকার ধারণ করে। কবি ও আইনজীবী রফিকুজ্জামান রনি জানান, তিন নদীর মিলনস্থল চাঁদপুরের বড় স্টেশন মোলহেড অত্যন্ত নান্দনিক একটি পর্যটন এলাকা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে ছুটে আসে সৌন্দর্যের টানে।
রূপসা জমিদারবাড়ি
চাঁদপুর জেলার ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ির মধ্যে অন্যতম রূপসা জমিদার বাড়ি। যা সাধারণ মানুষের কাছে অনেক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার স্থান। দেশব্যাপী এই বাড়ির সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। বিশেষ করে ভ্রমণপিপাসুরা চাঁদপুরে এলেই এই বাড়িটি একবার হলেও ঘুরে আসেন। জেলার মেঘনা নদীর পূর্ব ও দক্ষিণে ঐতিহ্যবাহী রূপসা জমিদার বাড়ি। জমিদারের জমিদারি না থাকলেও এতটুকু সম্মান আর শ্রদ্ধার কোনো ঘাটতি হয়নি প্রজা প্রিয় জমিদারদের প্রতি সাধারণ মানুষের। তাইতো এই এলাকার সাধারণ মানুষ আজও জমিদারদের পুণ্যময় কাজগুলোর প্রশংসা করতে ভোলেন না। মেঘনা পাড়ের সমৃদ্ধশালী অঞ্চল চাঁদপুরের গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই জমিদারবাড়ি ও পরিবারের ইতিহাস। এ অঞ্চলে অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ, জনহিতকর কাজের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ছিলেন রূপসার জমিদাররা।
জমিদারি প্রথা থাকাকালীন প্রজাদের খাজনার টাকায় ভোগ বিলাস না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অনেক কিছুই স্থাপন করে গেছেন তারা। চাঁদপুর শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের পাশে রূপসা বাজারের পশ্চিম দক্ষিণ কোনে নজর দিলেই দৃষ্টিতে পড়বে জমিদারবাড়ির সিংহদ্বার। পাশেই কারুকার্জ খচিত একটি মসজিদ। মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি কবরস্থান। এর প্রতিটি ফলকে লেখা রয়েছে চিরনিন্দ্রায় শায়িত ব্যক্তিদের সুকর্মের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। পথ ধরে সামনে এগুলেই চোখে পড়বে ঘাঁট বাঁধানো দীঘি। সামনেই নজরে পড়বে জমিদারবাড়ির ঐতিহ্যম-িত কাছারি ভবন। প্রায় তিনশ’ বছর আগের কথা। আঠারো শতকের মাঝামঝি সময়ে রূপসার জমিদারদের গোড়াপত্তন। রূপসার পূর্ব দিকে খাজুরিয়াতে বাইশ সিংহ পরিবার নামে এক সম্ভ্রান্ত ধনশালী হিন্দু পরিবার ছিল। কালের আবর্তে তাদের জমিদারির বিলুপ্তি ঘটলে আহম্মেদ রাজা চৌধুরীর কৃতিত্ব ও অদম্য স্পৃহায় রূপসা জমিদারবাড়িতে জমিদারির বীজ অংকুরিত হয়। তিনিই ছিলেন এই জমিদারির কর্ণধার। তার পরেই এই এস্টেট পরিচালনার গুরুদায়িত্ব পান মোহাম্মদ গাজী চৌধুরী। তিনি ছিলেন এই বংশের সর্বাপেক্ষা দানশীল ব্যক্তি। তার মৃত্যুর পর জমিদারির দায়িত্ব হাতে নেন আহম্মদ গাজী চৌধুরী। প্রকৃত অর্থে মোহাম্মদ গাজীর ছেলে আহমেদ গাজী চৌধুরীর সময়কালেই এ জমিদার পরিবারের বিস্তৃতি ঘটে। সাধারণভাবে জমিদার বলতেই সাধারণ মানুষের মনে যে, নেতিবাচক প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে, আহমেদ গাজী সে ধরনের জমিদার ছিলেন না। প্রজাহিতৈসী এ জমিদার তার কাজের মাধ্যমে নিজকে একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দয়া ও দানশীলতাই ছিল তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। জন কল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি অনেক জমি ওয়াকফ করে যান। তার মধ্যে লাউতলী দীঘির ওয়াকফ উল্লেখযোগ্য। শিক্ষানুরাগী এ জমিদার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। তারমধ্যে রূপসা আহম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রূপসা আহম্মদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, রূপসা স্কুল উল্লেখযোগ্য। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধর্মানুরাগী। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে তিনি অকৃপণভাবে অনুদান দিতেন। রূপসার সু-প্রাচীন মসজিদ তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়াও তার জীবদ্দশায় তিনি আরও অনেক মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। হবিগঞ্জের লস্করপুর সৈয়দ পরিবারের ঐতিহ্যম-িত সুপ্রাচীন সুশিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের এক সময়ের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। আহমেদ গাজী ঐ পরিবারে বিয়ে করেন।
তাঁর কোনো পুত্র সন্তান ছিল না। পাঁচ কন্যা সন্তনের মধ্যে দ্বিতীয় মেয়ে তহুরুন্নেছা চৌধুরাণী জমিদারির উত্তরাধিকার মনোনীত হন। আহমেদ গাজীর জীবদ্দশায় অন্যান্য কন্যা সন্তানদের মৃত্যু হয়। সুযোগ্য পিতার সুযোগ্য কন্যা তহুরেন্নেছা অচিরেই তার কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। জীবন সঙ্গী হিসেবেও তিনি মনোনীত করেছিলেন এক সুযোগ্য ব্যক্তিত্বকে। হবিগঞ্জের দাউদ নগরের বিখ্যাত জমিদার সৈয়দ শাহ কেরামত উল্যার ছেলে সৈয়দ হাবিব উল্যার সঙ্গে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তহুরুন্নেছা চৌধুরাণী রূপসাতেই ছিলেন এবং তার স্বামী মূলত জমিদারি দেখাশোনা করতেন। তহুরুন্নেছা অন্য দশজন জমিদারের মেয়ের মতো অন্তঃপুরে অলস জীপনযাপন করেননি। তিনি বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। তাঁর এ কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে তৎকালীন ব্রিটিশ পরিবার তাঁকে ‘কায়সারে হিন্দ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। এ খেতাব বিখ্যাত মহিলাদের জন্য এক দুর্লভ সম্মান। তহুরুন্নেছা চৌধুরাণীর এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। তার মেয়ের অকাল মৃত্যু হয়। সৈয়দ হাবিব উল্যার মৃত্যুর পর তার একমাত্র পুত্র সন্তান সৈয়দ আবদুর রশিদ চৌধুরী জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯০৭ সালে সৈয়দ আবদুর রশিদ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতায় পড়াশোনা করেন। উপমহাদেশের প্রখ্যাত মণীষা লাকসামের নবাব ফয়জুন্নেছার পরিবারের সঙ্গে তিনি বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। ঐ পরিবারের সৈয়দ গাজিউল হকের মেয়ে সৈয়দা আমিরুন নেছাকে বিয়ে করেন। আহমদ গাজিউল হক ছিলেন নবাব ফয়জুন্নেছার দৌহিত্র। সৈয়দ আবদুর রশিদ চৌধুরীর জীবিতাবস্থায় জমিদারি সবচেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করে। তিনি শুধু জমিদারী নিয়েই ছিলেন না। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সমাজ সচেতন। তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী অন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন। তিনি ছিলেন বঙ্গীয় মুসলিমলীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসকি বড় মসজিদ
চাঁদপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক নিদর্শন হচ্ছে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ। এটি শুধু একটি উপাসনালয় নয়, এটি একাধারে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের এক বর্ণময় উপাখ্যান। মসজিদটির দেয়ালে লেগে আছে শতাব্দীর প্রাচীন স্থাপত্যের ছোঁয়া। যা নীরবে বলে চলে মোগল আমলের গল্প। জেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার পূর্বে রয়েছে ইবাদতের কেন্দ্র হচ্ছে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসকি বড় মসজিদ। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ দেশ ও বিদেশে সবার কাছে খুবই পরিচিত। মসজিদের নয়নাভিরাম পরিবেশ দেখলে মনে প্রশান্তি জাগে। এই কমপ্লেক্সটি এখন উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা আহমাদ আলী পাটওয়ারী ১৩২৫ বঙ্গাব্দের দিকে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে বিশাল সম্পত্তি ওয়াকফ করেন। ওই সম্পত্তিতেই গড়ে ওঠে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ কমপ্লেক্স। মসজিদের ৯ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ১৭ আশ্বিন আহমদ আলী পাটওয়ারী (রহ.)’র পরম ইচ্ছায় হযরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.) এর পবিত্র হাতে পাকা মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। মসজিদের প্রথম অংশ (পূর্ব) ৪৭৮৪ বর্গফুট, মাঝের অংশ ১৩০০৬ বর্গফুট এবং শেষাংশ (পশ্চিম) ১৬১৫ বর্গফুট। সর্বমোট মসজিদের আয়তন ২৮৪০৫ বর্গফুট। মসজিদের প্রথম অংশের উপরের দিকে সুরা ইয়াছিন ও সুরা জুমআ লিপিবদ্ধ ছিল। সংস্কারের সময় তা উঠে যায়। মসজিদের অনন্য সুন্দর মেহরাবটি কাচের ঝাড়ের টুকরো নিখুঁতভাবে কেটে কেটে আকর্ষণীয় নকশায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মাঝের অংশটি ৭৭টি আকর্ষণীয় পিলার ও ঝিনুকের মুজাইক দিয়ে নির্মিত হয়। তৃতীয় অংশে রয়েছে তিনটি বিশাল গম্বুজসহ আকর্ষণীয় বিশাল সুউচ্চ মিনার।
১৯৫৩ সালে ১২২ফুট উঁচু এই সুউচ্চ মিনারটি নির্মাণ হয়। কারুকার্যখচিত মসজিদের সবশেষ পূর্ব প্রাচীরের পবিত্র কালেমা শরিফ খচিত চিনা বাসনের টুকরো দিয়ে তৈরি মনোরম ফুলের ঝাড়ের ন্যয় আকর্ষণীয় করে সাজানো বিশাল ফটক। মসজিদের প্রবেশের সুবিশাল ফটকটি দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নেয়। পাথরের সাজে সজ্জিত অসংখ্য তারকাখচিত তিনটি বড় বড় গম্বুজ পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মসজিদ কমপ্লেক্স থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গছে, এই মসজিদের জুমার নামাজের আজান ও একামতের উদ্বোধনী দিবসে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ চারজন মন্ত্রী এসেছিলেন। এ মসজিদে নামাজ পড়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীসহ আরও অনেকে। বিভিন্ন সময় এসেছেন বরেণ্য আউলিয়ারাও। স্থানীয়ভাবে প্রচলিত আছে, এই মসজিদ কমপ্লেক্সটি আল্লাহর অলীগণের রুহানি ফয়েজ ও বরকতে শিরক-বিদআত মুক্ত এবং ইবাদতের মারকাজ হিসেবে খ্যাত। মসজিদের কারামত ও ফয়েজ-বরকতে এই উপজেলা গৌরবান্বিত। যে কারণে অনেকেই নিয়ত ও মানতের অর্থ এখানে দান করেন। এই রেওয়াজ বহুবছর থেকে চালু আছে। এখানে নারীদের জন্য নামাজের সুব্যবস্থা আছে। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে এসে নামাজ আদায় করেন নারীরা। মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লি আব্দুল্লাহ বলেন, আসলে সকল মসজিদে নামাজ আদায় করা সমান। কিন্তু এই মসজিদের পরিবেশ আমাদের খুবই আকৃষ্ট করে। যার কারণে অনেক দূর থেকে নারী-পুরুষ এসে নামাজ আদায় করেন এখানে। প্রবীণ মুসল্লি সাইয়েদ আল হাসান বলেন, এই মসজিদের সৌন্দর্য মুসল্লিদের টানে।
হাজীগঞ্জে ৪০০ বছরের পুরানো মোগল আমলের ঐতিহাসিক ৩ মসজিদ
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে মোঘল শাসন আমলের শাহ সুজা, বাদশা আলমগীর ও মটকা মসজিদ। এই তিনটি মসজিদ প্রায় ৪০০ বছরের পুরানো ঐতিহ্য বহন করে আসছে। বাদশা আলমগীর ও শাহ সুজার নামানুসারে ঐতিহ্যবাহী মসজিদগুলোর নামকরণ করা হয়েছিল। বিগত প্রায় এক দশক পূর্বে স্থানীয় জনগণ এসব মসজিদ কিছুটা সংস্কার করে ইবাদাত করার উপযোগী করেন। জানা গেছে, জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামে দুটি মসজিদের অবস্থান এবং অপরটি পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড রান্ধুনীমুড়া দক্ষিণ পাড়া বড়বাড়ির সামনে একটি মটকা মসজিদ অবস্থিত। অলিপুরের মসজিদ ২টির মাঝামাঝির স্থানে শায়িত রয়েছেন চারজন আউলিয়া। ওই এলাকায় আউলিয়াদের উপস্থিত অনেক বেশি ছিল বলে গ্রামটির নামকরণ করা হয় অলিপুর গ্রাম। জানা যায়, মসজিদগুলোর মোঘল শানসামলের সময়ে করা। একটি মসজিদের প্রধান ফটকের উপরে ফরাসি ভাষায় ১৬৫০ সালে মসজিদটি নির্মিত।
ইতিহাস ঐতিহ্যের জেলা তথ্য বাতায়নে মসজিদ ৩টির মধ্যে ২টি মসজিদের নাম রয়েছে। অলিপুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ির সামনে অবস্থিত মসজিদ ২টির গায়ে ফার্সি ভাষায় বাদশাহ আওরঙ্গজেবের নামে উল্লেখ রয়েছে। একটি মসজিদ থেকে আরেকটি মসজিদের দূরত্ব প্রায় ৫০০ গজ। আলমগীর মসজিদে ৫টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের মূল স্থাপনা চারটি পিলারের ওপর দাঁড়ানো থাকলেও প্রতিটি গম্বুজে চারটি করে পিলার রয়েছে। আর প্রতিটি দেয়ালে উচ্চতা প্রায় ১৬ ফুট। শাহ সুজা মসজিদ তিনটি গম্বজের ওপর দাঁড়ানো। মাঝখানের মূল অংশে বড় ধরনের একটি গম্বুজ আর তার দুই পাশে ছোট দুটি গম্বুজ রয়েছে। এ মসজিদে এক সঙ্গে শতাধিক মুসল্লি নামাজ পড়তে পারে। দেয়ালের উচ্চতা প্রায় ১৬ ফুট। এলাকার মুসল্লিরা জানান, বাদশাহ আলমগীর মসজিদটি সরকারিভাবে ১৯৯৮ সালে মেরামত করা হলেও এরপর আর কোনো সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা মেলেনি। তাই বর্তমানে মসজিদগুলোর পূর্বেকার কারুশিল্পগুলো অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে অলিপুরের শাহ সুজা ও রান্ধুনীমুড়ার মটকা মসজিদটির মুসল্লির সংখ্যা পাওয়ায় সন্মুখ অংশে বারান্দা করার কারণে মসজিদগুলোর আগের দৃশ্য অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। তবে মূল মসজিদগুলো আগের আকৃতিতে রয়েছে। মসজিদের গায়ে আনারাস, ফুলসহ বিভিন্ন সৌন্দর্য খচিত কারুকাজ ছিল। এখন একটু বৃষ্টি হলে দেয়াল ভিজে উঠে আর স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। শাহ সুজা মসজিদ ব্যতীত অন্য ২টির বিদ্যুৎ বিলসহ মসজিদের সব ব্যয়ভার স্থানীয় মুসল্লিদের করতে হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, মসজিদগুলো মোঘলরা কুমিল্লায় ভ্রমণে এসে নির্মাণ করেন। এই অলিগণের মাজারের পাশে একটি দীঘি রয়েছে। এই দীঘিতে অলৌকিক ঘটনা ঘটে। এখানে গভীর রাতে অনেক উচ্চৈঃস্বরে কুরআন পাঠ আর জিকিরের শব্দ ভেসে আসতো। ঠিক কারা কোথায় কুরআন পাঠ করতো তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় না।
ঐতিহ্যের ধারক বাখরপুর জামে মসজিদ
চাঁদপুর জেলার সঙ্গে নৌ যোগাযোগ সহজ হওয়ার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যের ঐতিহ্য রয়েছে। যার ফলে এই এলাকায় ভারতীয় মুসলমানদের আগমন ঘটে। তারা অস্থায়ীভাবে এই জেলায় অবস্থান করলেও বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে যায়। ওইসব স্থাপনার অংশই হচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায় চুন-সুরকি দিয়ে তাদের তৈরি করা মসজিদ। মোগল আমলের মসজিদ নামে এসব স্থাপনাগুলো পরিচিত। তেমনি চাঁদপুর সদর উপজেলার বাখরপুর গ্রামে রয়েছে প্রায় ৪শ’ বছরের পুরানো ঐতিহ্যের ধারক বাখরপুর জামে মসজিদ। গায়েবি মসজিদ নামেও স্থানীয়ভাবে পরিচিত এটি। মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এই মসজিদ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য। জেলা সদর থেকে এই মসজিদের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। সদরের দক্ষিণে সদর-হাইমচর সড়ক হয়ে চান্দ্রা বাজার চৌরাস্তা থেকে দক্ষিণে বাখরপুর গ্রাম। মূল সড়ক থেকে গ্রামীণ সড়ক দিয়ে চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর পশ্চিম পাড়ায় মেঘনার নদীর খুবই নিকটেই মসজিদের অবস্থান। স্থানীয়দের তথ্যমতে এই মসজিদের নির্মাণ সালের সঠিক তথ্য সংরক্ষিত নেই এবং পাওয়া যায়নি। তবে ইতিহাস পর্যালোচনা ও প্রবীণ লোকদের মতে মোগল আমলেই এই মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। কারণ এটির নির্মাণ শৈলী দেখে তাই মনে হয়। মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন মুসল্লী নাজির পাটওয়ারী (৬৫)। তিনি বলেন, মসজিদ কমপ্লেক্সটি ২৮ শতাংশ জমির ওপর। এর মধ্যে তিন গুম্বজ বিশিষ্ট মসজিদ ভবনটি ৬ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত। এরপর বিগত প্রায় ৩০ বছর পূর্বে মসজিদের মুসল্লি সংকুলান না হওয়ার কারণে মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব দিকে ৮ শতাংশের মধ্যে ৫তলা ভিতের ওপর একতলা ভবনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পাশে ঈদগা ও পুকুর মিলিয়ে রয়েছে ১৪ শতাংশ। মুগল আমলের নক্সায় এই মসজিদটি তিন গম্বুজ ও ৩ তারাবিশিষ্ট। আর এই নির্মাণকাজ হয় শুধু চুন-সুরকি দিয়ে। পুরো মসজিদের চারপাশে ২৮টি চুন-সুরকির তৈরি খুঁটি রয়েছে। আর এই খুঁটির সঙ্গে দেয়ালের পুরুত্ব সোয়া ৩ফুট। পাঁচটি দরজা ও মূল মিম্বারের দুই পাশে দুটি মেহরাব। সোয়া ৩ফুট পুরুত্বের জুল বিম দুটি। মসজিদটি যখন নির্মাণ হয়, তখনকার নির্মাণ শৈলী অনেকাংশ এখন আর নেই। শুধু তিনটি গম্বুজের ভিতরের অংশে কিছু হাতে তৈরি নক্সা রয়েছে বিভিন্ন রঙের। এই মসজিদের মূল অংশে প্রায় দেড় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। বর্তমানে বর্ধিতাংশসহ প্রতি জুমআয় প্রায় ৩০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের মুসল্লি নাজির পাটওয়ারী জানান, ছোট বেলায় এই মসজিদটি সংস্কার না করায় মসজিদের ওপরে বিভিন্ন ধরনের গাছ ও আবর্জনা ছিল। অনেকের কাছেই এটি জিনের কিংবা গায়েবি মসজিদ নামে পরিচিত। যে কারণে একসময় ভয়ে লোকজন মসজিদের নিকট খুব কম আসত। এই এলাকাটি মেঘনা উপকূলীয় এলাকা। নদী ভাঙনে অনেক পরিবার নিজ বসতি ছেড়ে অন্যস্থানে বসতি গড়েছেন। বিগত প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগ থেকেই এটি সংস্কারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসে। মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি হাফেজ আহম্মেদ পাটওয়ারী বলেন, এই মসজিদ নির্মাণের প্রকৃত সাল তারিখ কেউ বলতে পারে না। তবে আমরা ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানতে পারি মুগল সা¤্রাজ্যের আমলে বণিকরা এই দেশে ব্যবসা করতে আসে, তখনই তারা এসব মসজিদ নির্মাণ করে। এই মসজিদের অনেক ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন মসজিদটি দেখার জন্য আসে। অনেকে আবার নিয়্যাত-মানত করেন। মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ গাজী বলেন, অনেকেই এই মসজিদকে গায়েবি কিংবা জিনের মসজিদ বলেন। আসলে তা নয়, আমাদের পূর্ব পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেও নির্মাণ সাল জানা যায়নি। তবে অনেকের তথ্যমতে এটি মুগল আমলেই তৈরি।
ফরিদগঞ্জের লোহাগড় মঠ
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংস্কার করায় নান্দকি হয়ে উঠেছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার লোহাগড় গ্রামের ঐতিহাসিক স্থাপনা লোহাগড় মঠ। ৫শ’ থেকে ৭শ’ বছর পূর্বে এসব মঠ নির্মাণ হয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। নানা কুসংস্কারের কারণে একসময় লোকজন মঠের কাছে না এলেও এখন তা দূর হয়েছে। যে কারণে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে এটির সংস্কার করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলা সদর থেকে এটির অবস্থান প্রায় ১৩ কিলোমিটার। ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা বাজারের নিকটবর্তী লোহাগড় গ্রামের ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণে ছোট বড় তিনটি মঠের অবস্থান। পাশে বহু ফসলি জমি এবং আধা কিলোমিটার দূরে বসতবাড়ি এবং গ্রামের পাকা সড়ক। মঠ দেখতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা আবু ছালেহ বারাকাত উল্লাহ বলেন, এই মঠ নিয়ে নানা কুসংস্কার আছে। তবে গত কয়েক বছর এটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নেয়। স্থানীয়ভাবে কিছু অর্থ বরাদ্দ হলেও ঐতিহাসিক এই স্থাপনা সংরক্ষণ হয়নি। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কাজ শুরু করায় এটির নান্দনিকতা ফিরে আসতে শুরু করেছে। এটির কাজ সম্পন্ন হলে এটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে রূপান্তর হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বলেন, আগে এখন খুব কম লোকজন আসত। গত কয়েকমাস আগে এটি সংস্কার হয়েছে। লোকজন এটি দেখার জন্য আসছে। যে কারণে আমি ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে বসেছি। দুর দূরান্ত থেকে লোকজন এলে কিছুটা হলেও সেবা দিতে পারব। উপজেলার ধানুয়া গ্রাম থেকে মঠ দেখতে এসেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে লিমন নামে শিক্ষার্থী বলেন, মঠগুলো সংস্কার কাজ হচ্ছে শুনে দেখার জন্য এসেছি। এর আগেও এসেছি কয়েকবার। তবে এখন খুব সুন্দর লাগছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দীন স্বপন মিয়া বলেন, এই মঠ আমাদের জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে একটি। এগুলো নিয়ে পূর্বের জনপ্রতিনিধিরা কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন শুনেছি। কিন্তু কি করা হয়েছে জানি না। তবে এখন যেহেতু সরকারিভাবে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে, আমাদের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা থাকবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ চন্দ্র দাস জালান, গত অর্থ বছরে আমরা এই মঠগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। কাজ চলমান আছে। পুরো কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে। আমরা শুধু এগুলো রিমডেলিং করছি। যাতে করে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাগুলোর স্থায়িত্ব আরও বাড়ে। চুন ও সুরকি ব্যবহার হচ্ছে। এই কাজে সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে না। দেশের অন্য স্থানেও এভাবে কাজগুলো করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের অধিদপ্তরের কাজই হচ্ছে ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো প্রথম সংস্কার, পরে সংরক্ষণ এবং নান্দনিক করে গড়ে তোলা। এখানেও তা করা হবে এবং জনগণের সামনে এটির সৌন্দর্য উপস্থাপন করা হবে। মানসম্মতভাবে কাজটি শেষ করার জন্য আমাদের নিয়মিত তদারকি রয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা গেছে, আজ থেকে প্রায় ৪ শ’ থেকে ৭ শ’ বছর পূর্বে লোহাগড় জমিদারবাড়ির জমিদাররা এই এলাকাটিতে রাজত্ব করতেন। মঠের মতো বিশালাকার দুটি প্রাসাদ। এই প্রাসাদেই জমিদাররা তাদের বিচারকার্য সম্পাদন করতেন। বিভিন্নত তথ্যে যানা যায় প্রতাপশালী দুই রাজা লৌহ এবং গহড় ছিলেন অত্যাচারী রাজা। তাদের ভয়ে কেউ মঠ সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যেতে শব্দ করতেন না।
জালাল চৌধুরী, চাঁদপুর
প্যানেল