ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

দুই সপ্তাহেই বুঝবেন পার্থক্য: ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার, ওজন—সব কিছুতেই কাজ করে গ্রিন টি!

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ১৯ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৬:০৭, ১৯ জুন ২০২৫

দুই সপ্তাহেই বুঝবেন পার্থক্য: ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার, ওজন—সব কিছুতেই কাজ করে গ্রিন টি!

ছবি: সংগৃহীত

প্রতিদিনের এক কাপ কফি বা চায়ের পরিবর্তে যদি গ্রিন টি পান শুরু করেন, মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই শরীরে দেখা দিতে পারে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন। গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, গ্রিন টি কেবল একটি পানীয় নয়এটি হজম, লিভার, হৃদযন্ত্র এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণেও বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশেষ করে যারা হজম ও পেটের সমস্যা নিয়ে ভুগছেন, তাদের জন্য গ্রিন টি হতে পারে কার্যকর একটি উপায়। আমেরিকান গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. জোসেফ সালহাব জানান, ‘গ্রিন টি মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে পেটের স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।’

১. হজমে সহায়ক: পেটের ভালো বন্ধু

২০১২ সালের Microbiology and Immunology সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, গ্রিন টি খেলে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া যেমন-Bifidobacteria বাড়ে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো হজমে সাহায্য করে, গ্যাস-অম্বল কমায় এবং পেট ফাঁপা দূর করে। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে।

২. লিভার সুরক্ষায় গ্রিন টি

২০১৩ সালের International Journal of Molecular Medicine-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিনস (catechins) লিভারের ফ্যাট জমা কমায় এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD)-এর প্রগতি রোধে সাহায্য করে।

ডা. সালহাব বলেন, ‘গ্রিন টি লিভারকে রক্ষা করতে পারে এবং ফ্যাটি লিভার ধীর করতে কার্যকর।’

৩. হৃদযন্ত্র ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে

গ্রিন টি নিয়মিত খেলে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ে, রক্তচাপ কমে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদরোগের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা চার সপ্তাহ গ্রিন টি এক্সট্র্যাক্ট খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে এবং পেটের প্রদাহ হ্রাস পায়।

এছাড়া গ্রিন টি-তে থাকা L-theanine উপাদান মনকে শান্ত রাখে, ক্লান্তি ছাড়াই মানসিক সতেজতা বাড়ায়।

৪. ওজন ও পেটের চর্বি কমাতেও সহায়ক

২০২০ সালের এক সমীক্ষা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গ্রিন টি খেলে ওজন, বডি মাস ইনডেক্স (BMI) এবং পেটের চর্বি কমতে সাহায্য করে, বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। এতে থাকা ক্যাটেচিনস শরীরের ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

৫. মনের প্রশান্তি ও বয়সের ভার হ্রাস

গ্রিন টি খেলে শুধু শরীর নয়, মনের ওপরও প্রভাব পড়ে। চিন্তাভাবনা পরিষ্কার হয়, ঘুমের মান বাড়ে, এমনকি বার্ধক্যজনিত মানসিক দুর্বলতার ঝুঁকিও কমে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডা. সালহাব আরও বলেন, ‘আমি মাঝে মাঝে মেনথ বা জেসমিন দিয়ে গ্রিন টি মিশিয়ে নিই। এতে স্বাদ বাড়ে এবং ক্যাফেইনও কম থাকে।’

কখন উপকার পাবেন?

গ্রিন টি-র উপকারিতা প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়। তবে ১০ দিনের পর থেকে এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই একবারে কোনো চমক না পেলেও ধৈর্য ধরে দুই সপ্তাহ পান করুনফল মিলবেই।

সতর্কতা: এই প্রতিবেদনটি ইন্টারনেটভিত্তিক গবেষণা ও চিকিৎসক উদ্ধৃতির আলোকে প্রস্তুত। এটি কেবল সাধারণ জ্ঞানের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×