
ছবিঃ সংগৃহীত
এক কোয়া কাঁচা রসুন—এই সামান্য জিনিসটি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলেই মিলতে পারে দারুণ সব স্বাস্থ্য উপকার। সকালে, বিকেলে কিংবা রাতে—যেকোনো সময় খাওয়া যায় কাঁচা রসুন। সালাদ, দই, ধনেপাতা বা কচু বাটায় মিশিয়েও খেতে পারেন। অসুবিধা হলে নারকেল বাটার সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে কার্যকরী হচ্ছে একে কাঁচা অবস্থায় খাওয়া।
বিশ্বের প্রাচীনতম চিকিৎসাবিদদের একজন, হিপোক্রেটিসও ব্যবহার করেছিলেন রসুনকে চিকিৎসায়। আধুনিক গবেষণাও বলছে, হৃদযন্ত্র থেকে শুরু করে হাড়ের স্বাস্থ্য পর্যন্ত রসুনের রয়েছে বিস্ময়কর ভূমিকা। চলুন জেনে নিই, কীভাবে কাঁচা রসুন শরীরকে রাখে সুস্থ ও সতেজ।
রসুন খাওয়ার ৮টি বড় উপকারিতা:
১. রক্তচাপ কমাতে সহায়ক
প্রতিদিন চার কোয়া কাঁচা রসুন খেলে রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে এটি ওষুধের মতোই কার্যকর।
২. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনে
রসুন টোটাল ও এলডিএল (ক্ষতিকর) কোলেস্টেরল প্রায় ১০–১৫% কমাতে পারে। তবে এইচডিএল (উপকারী) বাড়ায় না।
৩. অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর
রসুনে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালস প্রতিরোধ করে হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি রোধ করে।
৪. হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর
হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত রসুন খেলে তারা অনেক বেশি সক্রিয় ও কর্মক্ষম থাকেন।
৫. স্মৃতিশক্তি ও আয়ু বাড়ায়
রসুনে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকায় অ্যালঝাইমার, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।
৬. হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে হাড়কে রাখে মজবুত।
৭. শীষা (lead) বিষক্রিয়ায় রক্ষাকবচ
রসুন লেড টক্সিসিটি কমিয়ে শরীরকে বিষক্রিয়া থেকে রক্ষা করে।
৮. সাপ্লিমেন্ট নয়, চাই কাঁচা রসুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রক্রিয়াজাত রসুন বা রসুন সাপ্লিমেন্টে অ্যালিসিন থাকে না বললেই চলে। অথচ এই উপাদানটিই রসুনের প্রধান ওষুধি গুণের উৎস।
কেন কাঁচা রসুনই সবচেয়ে উপকারী?
রসুন কাটার পর যে ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোয়, তার উৎস অ্যালিসিন। এটি শরীরে অতিমাত্রায় গেলে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে, তবে সঠিক মাত্রায় তা হয় কার্যকর ওষুধ। তবে মনে রাখতে হবে—রসুন কাটার কিছুক্ষণের মধ্যেই এর উপকারি উপাদানগুলো নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে। তাই রসুন বাটার পর তা দ্রুত খাওয়া জরুরি। রান্না বা শুকনো রসুন, এমনকি বাজারজাত রসুন বাটায়ও অ্যালিসিন থাকে না।
প্রাকৃতিক ওষুধ খুঁজছেন? প্রতিদিন মাত্র একটি কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললেই দেখবেন, দেহে দারুণ পরিবর্তন আসছে। তবে যেকোনো খাবারের মতোই রসুন খাওয়ার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ততা নয়, চাই পরিমিতি। স্বাস্থ্যের জন্য আজ থেকেই শুরু হোক ‘রসুন স্বাস্থ্যচর্চা’।
আলীম