ছবি: প্রতীকী
যুদ্ধ ও রাজনৈতিক সংঘাতের সময় অর্থনৈতিক অবস্থা অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যারা অনেক শ্রম ও পরিশ্রম করে টাকা-পয়সা জমিয়েছেন, তারা চিন্তিত হন কীভাবে তাদের কষ্টার্জিত টাকা নিরাপদ রাখা যায়। বাংলাদেশে এই পরিস্থিতিতে নিরাপদ বিনিয়োগের কিছু উপায় রয়েছে, যা আপনাকে অস্থির সময়ে সুরক্ষা দিতে পারে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রাচীন বিনিয়োগ মাধ্যম হলো জমি। বাংলাদেশের বাজারে জমির দাম ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে শহর সংলগ্ন বা উন্নয়নশীল এলাকায় জমির চাহিদা বেশি। জমি কেনার সময় জায়গার লোকেশন ভালো হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে সেখানে আবাসন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা অবকাঠামো উন্নয়নের সম্ভাবনা থাকে। জমিতে বিনিয়োগ করলে আপনি শুধু মূলধন রক্ষা করতে পারবেন না, তা থেকে ভবিষ্যতে লাভও নিতে পারবেন। তাছাড়া জমি হলো সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ। যুদ্ধ হলেও বিনিয়োগকৃত জমি থাকে অক্ষত!
অপর একটি ভালো বিকল্প হলো ফ্ল্যাট বা আবাসন। বর্তমানে ঢাকার মতো বড় শহরে ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বাসস্থান হিসেবে ফ্ল্যাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি একটি লাভজনক বিনিয়োগ হতে পারে। তবে আবাসন কেনার সময় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা উচিত। এছাড়া ফ্ল্যাটের সাইজ, অবস্থান, যোগাযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করতে হবে। আবাসনে বিনিয়োগ করলে ভাড়া দিয়ে নিয়মিত আয়ও করা যায়।
স্বর্ণের গহনা বা বারগুলোও বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে সুরক্ষিত এক ধরনের সম্পদ। স্বর্ণের বাজার কখনোই পুরোপুরি ধ্বংস হয় না এবং এটি বাজারের ওঠানামা থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকে। বিশেষ করে যুদ্ধ, অস্থিরতা বা অর্থনৈতিক মন্দার সময় স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়। তাই স্বর্ণ কেনা একটি নিরাপদ উপায়। তবে গহনার পরিবর্তে বার বা কয়েন আকারে স্বর্ণ রাখা ভালো, কারণ এগুলো বেশি তরল এবং বিক্রয় সহজ।
বাজারের ওঠানামার কারণে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে অস্থির সময়ে। তাই যুদ্ধ ও রাজনৈতিক সংঘাতের সময় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এড়ানো ভালো।
সর্বোপরি, যেকোনো বিনিয়োগের আগে নিজের আর্থিক অবস্থা, ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা এবং বাজার পরিস্থিতি ভালোভাবে বুঝে নেওয়া জরুরি। সতর্কতা অবলম্বন করলে এবং বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগ করলে আপনার টাকা নিরাপদ থাকবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যপী চলমান যুদ্ধ বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় জমি, আবাসন এবং স্বর্ণ বিনিয়োগের সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম। এই সম্পদগুলো দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্ন দিতে সক্ষম এবং অস্থিরতাকালে আর্থিক সুরক্ষা দেয়। আপনার টাকাকে নিরাপদ রাখতে এসব বিকল্পের কথা ভাবুন এবং পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন।
এম.কে.
