
জুতার ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি
১৫০ টাকা পর্যন্ত দামের প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল (স্যান্ডেল) ও জুতার ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন জুতা উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, চলতি অর্থবছর থেকে চালু হওয়া এই ভ্যাটের কারণে নি¤œ আয়ের মানুষের ব্যবহারের কম দামি এই জুতার দাম বাড়ছে। জুতা উৎপাদকদের অভিযোগ, ১৫০ টাকা পর্যন্ত দামের প্লাস্টিকের চপ্পল ও স্যান্ডেলে ভ্যাট আরোপের ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট কারখানা।
ব্যবসা চলে যাচ্ছে বিদেশিদের হাতে। এ অবস্থায় প্রতি জোড়া ১৫০ টাকা মূল্যসীমা পর্যন্ত প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও প্লাস্টিকের জুতা উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে মূসক বা ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির নেতারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে ডিআরইউর সামনের সড়কে মানববন্ধনও করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, স্থানীয় শিল্পের প্রসার ও ভোক্তাদের অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি জুতায় মূল্য সংযোজন কর বা মূসক অব্যাহতি সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে গত ৯ জানুয়ারি এসআরও জারি করে বিদ্যমান মূসক অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও মূসক আরোপ করা হয়েছে।
জুতা ব্যবসায়ীরা জানান, ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে বিদেশি পণ্য (সমজাতীয় চপ্পল ও জুতা) আমদানি বাড়ছে। এতে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ক্রমবিকাশমান এই শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। সমিতির নেতারা জানান, ভ্যাট বাড়ানোর ফলে কমদামি এসব পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ফলে কমেছে উৎপাদন ও বিক্রি। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানেও।
নেতারা জানান, দেশে প্লাস্টিকের চপ্পল উৎপাদন কমে যাওয়ায় পরিবেশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পুরোনো জুতা-স্যান্ডেল গলিয়ে এসব চপ্পল উৎপাদন করা হয়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই খাতে আবারও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ফজলু, সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন, সচিব ইমরুল কায়েস ও সদস্য জাহেরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মো. তাইফুল সিরাজ। তিনি বলেন, প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব অযৌক্তিক। এটি কার্যকর হলে এই সাশ্রয়ী পণ্য সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। তাইফুল সিরাজ বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির ফলে সরাসরি পণ্যের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছিল। ভোক্তারা সরাসরি এই সুবিধা পেয়েছেন।