
ছবি: সংগৃহীত
গ্রিন টি, ক্রুসিফেরাস জাতীয় সবজি, সিট্রাস ফল, হলুদ ও রসুন—এই পাঁচটি খাবার লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং লিভারকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লিভার শরীরের রক্তকে বিশুদ্ধ করে, ক্ষতিকর পদার্থ নির্মূল করে এবং ভিটামিন ও আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণে সাহায্য করে। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থকে পানিতে দ্রবণীয় রূপে রূপান্তর করে, যাতে সেগুলো ঘাম বা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যেতে পারে।
ভিয়েতনামের হ্যানয়ে তাম আন জেনারেল হাসপাতালের নিউট্রিশন বিভাগের ড. ট্রান থি ট্রা ফুয়ং জানান, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পাশাপাশি নিচের খাবারগুলো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে লিভার কার্যকারিতা আরও উন্নত হয়।
১. গ্রিন টি
গ্রিন টি বা সবুজ চা লিভার সুস্থ রাখতে কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে লিভারকে সুরক্ষা দেয়, হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
২. ক্রুসিফেরাস সবজি
ব্রোকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বীন স্প্রাউটস ও কেল জাতীয় সবজিতে থাকে গ্লুটাথিওন, যা লিভারের এনজাইম সক্রিয় করে ও ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া উন্নত করে। এসব সবজিতে গ্লুকোসিনোলেটস নামক যৌগও থাকে, যা ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান ও অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
৩. হলুদ
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, যা পিত্ত উৎপাদন বাড়ায় এবং ভারী ধাতব বিষাক্ততা থেকে লিভারকে সুরক্ষা দেয়। এটি লিভার কোষের ক্ষত সারাতে সহায়ক।
৪. সিট্রাস ফল
কমলা, আঙুর ও লেবুর মতো সিট্রাস ফলে প্রচুর ভিটামিন C থাকে, যা লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্ষতিকর পদার্থকে পানি-দ্রবণীয় রূপে রূপান্তর করে শরীর থেকে সহজে বের করে দিতে সাহায্য করে। বিশেষ করে আঙুরে থাকা নারিনজিন ও নারিনজেনিন যৌগ লিভারের প্রদাহ কমায় এবং কোষ রক্ষা করে।
৫. রসুন
রসুনে সালফার, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম রয়েছে। সালফার লিভারের এনজাইম সক্রিয় করে এবং ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। সেলেনিয়াম লিভারের প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক। নিয়মিত রসুন খাওয়ার মাধ্যমে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসজনিত লিভার ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ড. ফুয়ং আরও জানান, লিভার সুস্থ রাখতে লেবুর রস, আপেলের রস, অ্যাভোকাডো বা পেঁপের স্মুদি, তরমুজ বা কিউই জুস উপকারী। এছাড়া মিল্ক থিসল (S. Marianum) এবং ওয়াসাবিয়া জাতীয় প্রাকৃতিক নির্যাস লিভার কোষ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
লিভার সুস্থ রাখার জন্য করণীয়
-
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের ঝুঁকি বাড়ায়।
-
নিয়মিত ব্যায়াম ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে ও লিভারে চর্বি জমা প্রতিরোধে কার্যকর।
-
পর্যাপ্ত পানি পান লিভারকে ঘাম ও প্রস্রাবের মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
-
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বিশেষ করে লিভার ফাংশন টেস্ট, লিভারের অবস্থা বুঝতে ও লিভার রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
আবির