ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে প্রতি সপ্তাহে খেতে হবে এই ৫টি খাবার

প্রকাশিত: ০০:১২, ১৫ জুন ২০২৫

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে প্রতি সপ্তাহে খেতে হবে এই ৫টি খাবার

ছবি:সংগৃহীত

সম্পূর্ণ খাবারভিত্তিক মেডিটেরেনিয়ান স্টাইলের ডায়েট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা সালমনের মতো মস্তিষ্ক-বান্ধব পাঁচটি খাবারের কথা বলেছেন, যা আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক।

সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং অ্যালকোহল সীমিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।

১. সালমন (Salmon)
সামুদ্রিক মাছ খাওয়া স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।
বিশেষ করে সালমন, টুনা এবং ম্যাকারেলের মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ এই কাজে বেশি সহায়ক।

ভ্যানেসা কিং, M.S., RDN জানান, “৩ আউন্স রান্না করা সালমন থেকে ভিটামিন B6-এর দৈনিক চাহিদার ২৩% এবং B12-এর ১০০%-এর বেশি পাওয়া যায়।” এই বি-ভিটামিনগুলো রক্তে হোমোসিস্টেইনের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে, যা স্ট্রোকের একটি ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান। সালমন দিয়ে সালাদ তৈরি করুন অথবা সহজভাবে বেক করে খেতে পারেন।

২. কফি
স্ট্রোক প্রতিরোধে আপনার সকালের কফি ছাড়ার দরকার নেই।

অ্যামি ব্রাউনস্টেইন, M.S., RDN বলেন, “ক্যাফেইনের পাশাপাশি কফিতে থাকা পলিফেনল যেমন ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।”

শর্করা যোগ না করাই ভালো, কারণ অতিরিক্ত চিনি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। স্বাস্থ্যকর কফি পানীয় চেষ্টা করতে পারেন।

৩. পালং শাক (Spinach)
পালং শাক পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এটি মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ উন্নত করতে সাহায্য করে।

কিং বলেন, “আধা কাপ রান্না করা পালং শাকে রয়েছে ফোলেট এবং ম্যাগনেসিয়াম।” একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ ফোলেট গ্রহণ স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৭% কমাতে পারে। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতি ১০০ ক্যালোরিতে ১৮.৫ মিগ্রা বা তার বেশি ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করেন, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৪০% কমে।

গরম বা ঠান্ডা যেকোনোভাবে পালং শাক খেতে পারেন—অলিভ অয়েলে রান্না করে বা স্ট্রবেরি-বালসামিক সালাদ হিসেবে।

৪. ছোলা (Chickpeas)
ছোট কিন্তু শক্তিশালী ছোলা স্ট্রোক প্রতিরোধকারী পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ।

১ কাপ ছোলায় ভিটামিন B6-এর দৈনিক চাহিদার ১০% থাকে, যা হোমোসিস্টেইনের মাত্রা কমায় বলে জানিয়েছেন কিং। এগুলি রান্না ছাড়াই ব্যবহার করা যায় এবং সহজেই সালাদ, স্যুপ বা স্ন্যাকসে যোগ করা যায়।

৫. সয়া খাবার (Soy Foods)
টোফু, টেম্পে ও এডামামে সয়া-ভিত্তিক প্রোটিন যা মস্তিষ্ক ও হৃদয় উভয়ের জন্য ভালো।

ব্রাউনস্টেইন বলেন, “সয়া প্রোটিন রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এতে ফ্যাট কম এবং ফাইটোইস্ট্রোজেন ও আইসোফ্ল্যাভোন আছে, যা রক্তনালীকে শিথিল করতে পারে।”

পুরোপুরি মাংস বাদ না দিলেও সপ্তাহে একদিন ‘মিটলেস মানডে’ পালন করে সয়া খাবার দিয়ে এক বেলা খাবার তৈরি করতে পারেন—যেমন সয়া টাকো।

স্ট্রোক প্রতিরোধে অন্য কৌশল
সঠিক খাবারের পাশাপাশি এই অভ্যাসগুলোও স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে:

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম করুন। এটি ওজন, কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • ধূমপান ছাড়ুন: এটি স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর একটি।
  • অ্যালকোহল সীমিত করুন: পুরুষদের দিনে ২টি ও মহিলাদের দিনে ১টি পানীয়র বেশি নয়।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান: রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং রক্তে গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণে থাকুন।


স্ট্রোক প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাসে ছোট ছোট পরিবর্তনও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
সালমন, পালং শাক, ছোলা ও অন্যান্য সম্পূর্ণ খাবার নিয়মিত খেলে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ সুস্থ থাকবে।

মারিয়া

×