
করোনাভাইরাস মহামারিতে কয়েক মাস ধরে গৃহবন্দি থাকার ভয়াবহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেনি বিশ্ব। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির কারণে ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী ঘটেছে অসংখ্য প্রাণহানি।
তবে সেই দুঃসময়ের পর আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে বিশ্ববাসী। স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্র, পরিবহনব্যবস্থা—সবকিছু ফিরে পেয়েছে আগের গতি। কিন্তু এর মধ্যেই নতুন করে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের এক শক্তিশালী সাব-ভ্যারিয়েন্ট NB.1.8.1, যা বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্যে।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানা যায়, NB.1.8.1 নামের এ ভ্যারিয়েন্টটি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে অন্তত ১৩ জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে।
সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মাইকেল হেড বলেন, “ভ্যারিয়েন্টটির প্রভাব ক্রমাগত বাড়ছে এবং এটি আগের মিউটেশনগুলোর তুলনায় বেশি বিবর্তনীয় সুবিধা পেয়েছে।” তাঁর মতে, NB.1.8.1 অন্যান্য করোনাভাইরাসের তুলনায় অনেক সহজে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এটি করোনার টিকা গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, সেটিও ব্যর্থ করে দিতে পারে।
এই ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে—টানা দীর্ঘ কাশি, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা ও খাবারের রুচি নষ্ট হওয়া। উপসর্গগুলোর যেকোনো একটি দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে তাৎক্ষণিকভাবে করোনা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন ড. হেড।
শুধু যুক্তরাজ্য নয়, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি ইতোমধ্যেই হংকং, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, থাইল্যান্ড এবং মালদ্বীপে শনাক্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, কোভিড-১৯-এর চেয়েও ভয়াবহ এক ধরনের ফাঙ্গাল ভাইরাস তাদের দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে চীনের মাধ্যমে। এই অভিযোগে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ববাসীকে এখনই সতর্ক হতে হবে। পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেওয়াই পারে ভবিষ্যতের বড় সংকট ঠেকাতে।
সানজানা