
মিষ্টি খেতে কে না ভালোবাসে! বিশেষ করে শিশুরা তো মিষ্টি-চকোলেট, আইসক্রিম আর মিষ্টিজাতীয় খাবার দেখলেই আনন্দে লাফিয়ে ওঠে। কিন্তু এই আনন্দময় অভ্যাসটি ভবিষ্যতে রূপ নিতে পারে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোটবেলা থেকেই অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস শিশুদের সারা জীবনের জন্য স্বাস্থ্যগত ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (NIH) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতে, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে শিশুদের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি, দাঁতের সমস্যা, মনোযোগে ঘাটতি, এমনকি ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকিও বাড়ে।
কী কী ক্ষতি হতে পারে?
১. ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা
চকলেট, পেস্ট্রি, মিষ্টি—এসব খাবারে থাকে উচ্চমাত্রায় ক্যালরি, কিন্তু পুষ্টিগুণ প্রায় নেই বললেই চলে। নিয়মিত এসব খেলে শিশুদের ওজন বাড়ে, যা পরবর্তী সময়ে স্থূলতা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
২. দাঁতের ক্ষতি
চিনি শুধু মানুষের নয়, মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ারও খুব প্রিয়। ব্যাকটেরিয়া যখন চিনির ওপর ভরসা করে, তখন তারা এমন অ্যাসিড তৈরি করে যা দাঁতের এনামেল নষ্ট করে দেয়। ফলে হয় ক্যাভিটি ও দাঁতের ক্ষয়।
৩. শক্তি বাড়ে হঠাৎ, পড়ে যায় দ্রুত
চিনি খাওয়ার পর হঠাৎ শিশুরা খুব চঞ্চল হয়ে যায়, কিন্তু কিছুক্ষণ পরই ক্লান্ত, খিটখিটে ও মনোযোগহীন হয়ে পড়ে। এই রক্তে গ্লুকোজের ওঠানামা মন-মেজাজ ও পড়ালেখায় প্রভাব ফেলে।
৪. দীর্ঘমেয়াদে অসুস্থতার ঝুঁকি
ছোটবেলা থেকেই বেশি চিনি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠলে বড় হয়ে নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে
অতিরিক্ত চিনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল করে। ফলে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের প্রবণতা বাড়ে।
করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শিশুদের মাঝে মাঝে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে দেওয়া যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে। বরং ফলমূল, দুধ ও ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারেই শিশুর রুচি গড়ে তুলুন।
সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলতে হলে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই চিনি খাওয়ার অভ্যাসে লাগাম টানতে হবে; এই অভ্যাসই গড়ে দেবে সুস্থ ভবিষ্যতের ভিত্তি।
মিমিয়া