
ছবিঃ সংগৃহীত
ঈদুল আযহা মানেই যেন মাংসের ঈদ। এ সময় ঘরে ঘরে চলে নানা ধরনের রকমারি মাংস রান্না ও ভোজন উৎসব। তবে এই আনন্দের মাঝেই অজান্তেই শরীরে ক্যালোরির স্তুপ জমে যায়, বাড়ে ওজন, দেখা দেয় নানা শারীরিক সমস্যা। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা তাই সতর্ক করে বলছেন—ঈদের দিনে খাওয়া-দাওয়ায় থাকা চাই সচেতনতা ও সংযম।
এক পুষ্টিবিদের ভাষ্য অনুযায়ী, “১০০ গ্রাম খাসির রান্না করা মাংসে ক্যালোরির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ ক্যালোরি। এমন দু-তিনটি পিস খাওয়াই যদি হয়, তাহলে প্রায় হাজারখানেক ক্যালোরি শরীরে ঢুকে যাচ্ছে।” এছাড়া মাংস বারবার ভেজে বা অতিরিক্ত তেলে রান্না করলে ক্যালোরির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, “যেমন একটি সেদ্ধ ডিমে ক্যালোরি থাকে ৭০ থেকে ৭৫। কিন্তু সেটিকে ভুনা বা ডিপ ফ্রাই করলে সেটি হয়ে যায় ১৫০ থেকে ২০০ ক্যালোরি। আর এই অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করতে হলে কমপক্ষে দুই থেকে তিন মাইল হাঁটতে হয়।”
ঈদে খাওয়ার পাশাপাশি আরও একটি অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়—বড় বড় ফ্রিজ কেনা ও বছরের পর বছর মাংস জমিয়ে রাখা। পুষ্টিবিদের মতে, “বছরজুড়ে ফ্রিজে রেখে রেখে ভুনা করে খাওয়া শরীরের জন্য একেবারেই ভালো না। এটি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। একইসাথে প্রশ্ন ওঠে এর ধর্মীয় গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও।”
তাঁর পরামর্শ, “আমরা যদি কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা অনুসরণ করি, তবে দেখা যায়—অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগির মধ্যেই রয়েছে ঈদের আসল আনন্দ। নিজের জন্য না রেখে যারা খেতে পারে না, তাদের জন্য দিলে তবেই শান্তি।”
তিনি আরও বলেন, “আল্লাহ তাআলা আমাদের স্মরণ করতে বলেছেন, এবং আমাদের আশপাশের সৃষ্টিজগতের দিকেও তাকাতে বলেছেন। কোরবানি দিন, তবে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী। বড় বড় ফ্রিজে মাংস জমিয়ে রাখার চেয়ে বরং কোরবানির আনন্দটা ভাগ করে নেওয়াই হোক আসল শিক্ষা।”
✅ ঈদে খাওয়ার সময় যা মাথায় রাখবেন:
-
অতিরিক্ত তেলে রান্না করা খাবার পরিহার করুন
-
দিনে দুইবারের বেশি মাংস খাবেন না
-
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
-
হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করুন
-
খাবারে শাকসবজি ও সালাদ রাখুন
-
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
সবশেষে, ঈদের আনন্দ হোক সকলের জন্য সমান। খাওয়া হোক পরিমিত, স্বাস্থ্যবান্ধব ও মানবিক।
সবার জন্য ঈদ হোক আনন্দময় ও সুস্থতার। ঈদ মোবারক!
ইমরান