
ছবি: সংগৃহীত
উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন এখন শুধু মধ্যবয়সীদের সমস্যা নয়, তরুণদের মধ্যেও এটি ছড়িয়ে পড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এই ‘নীরব ঘাতক’ হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকির অন্যতম প্রধান কারণ। তবে ওষুধ ছাড়াও কিছু প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে, যেগুলো নিয়মিত খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
আজ আমরা এমন ছয়টি খাবারের কথা জানাবো, যেগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে সেগুলো প্রাকৃতিকভাবে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এই খাবারগুলো আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে আপনি উচ্চ রক্তচাপ থেকে নিরাপদ থাকতে পারেন।
১. কলা
কলা পটাশিয়ামে ভরপুর, যা শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে রক্তনালীগুলো শিথিল হয় এবং ধমনী দেয়ালে চাপ কমে যায়। ফলাফল? রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে স্বাভাবিকভাবে। এটি একটি সহজলভ্য ও বহনযোগ্য হৃদয়বান্ধব ফল। প্রতিদিন অন্তত ১-২টি কলা খেতে পারেন।
২. বিটরুট
বিটরুটে রয়েছে প্রাকৃতিক নাইট্রেট, যা শরীরে গিয়ে রূপ নেয় নাইট্রিক অক্সাইডে। এই যৌগ রক্তনালী প্রশস্ত করে এবং রক্তপ্রবাহ উন্নত করে, ফলে দ্রুত রক্তচাপ কমে আসে। বিশেষত বিটের রস পান করলে তাৎক্ষণিক উপকার পাওয়া যায়। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস বিটের রস খাওয়া উপকারী।
৩. ওটস
ওটসে থাকে বিটা-গ্লুকান নামক একটি দ্রবণীয় আঁশ, যা কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ দুইই কমাতে সহায়ক। নিয়মিত ওটস খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। প্রাতঃরাশে ওটস খান দুধ বা ফলের সঙ্গে।
৪. পালং শাক
এই পাতাযুক্ত সবজিতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও নাইট্রেট। এগুলো রক্তনালী প্রসারিত করে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে। পালং শাক হৃদযন্ত্রের জন্য একটি শক্তিশালী সহায়ক। ভাজি, স্যুপ বা স্মুদি যেভাবেই হোক, নিয়মিত পালং খান।
৫. রসুন
রসুনে থাকে অ্যালিসিন নামক একটি যৌগ, যা রক্তপ্রবাহ বাড়ায় ও রক্তচাপ কমায়। বিশেষ করে কাঁচা বা অল্প রান্না করা রসুন খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়া উপকারী।
৬. ডার্ক চকলেট
৭০% বা তার বেশি কোকোযুক্ত ডার্ক চকলেট ফ্ল্যাভোনয়েডে সমৃদ্ধ। এটি রক্তনালীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে, চাপ কমায় ও হৃদয় সুরক্ষা দেয়। তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।দিনে ২০-৩০ গ্রাম ডার্ক চকলেটই যথেষ্ট।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুধু ওষুধ নয়, দরকার স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া। এই ছয়টি খাবার আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে আপনাকে দিতে পারে দীর্ঘস্থায়ী সুস্থতা। তবে যেকোনো খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সর্বোত্তম।
মুমু