
ছবিঃ সংগৃহীত
বর্তমানে ‘হাড় ক্ষয়’ কথাটি এতটাই ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়ে গেছে যে, অনেক শিক্ষিত এবং সচেতন মানুষও এটিকে একটি ভয়ঙ্কর রোগ হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। অথচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়।
প্রখ্যাত চিকিৎসকরা বলছেন, ‘হাড় ক্ষয়’ বলতে যা বোঝানো হয়, সেটি অনেকাংশেই আতঙ্ক তৈরি করে রোগীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে ফেলে। রোগীরা মনে করেন, তারা আর চলাফেরা করতে পারবেন না, কিছু কাজ করতে গেলেই বুঝি হাড় ভেঙে যাবে। অথচ বাস্তবতা হলো—বয়সের সঙ্গে হাড় কিছুটা দুর্বল হওয়া স্বাভাবিক, তবে এটাকে ভয়ঙ্কর রোগ বানিয়ে তোলা একধরনের ভুল ব্যাখ্যা।
চিকিৎসকদের মতে, ‘হাড় ক্ষয়’ শব্দটি পরিহার করে বলা উচিত, “আপনার হাড় নরম হয়েছে” বা “বয়সজনিত কারণে হাড়ের ঘনত্ব কিছুটা কমে গেছে।” হাড় সুস্থ রাখতে শারীরিক পরিশ্রম, হাঁটাহাঁটি, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা, হালকা ব্যায়াম—এইসব নিয়মিত অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার।
ডাক্তারের কথায়, “আমাদের দেহে ৬৫০টি মাংসপেশি, ২০৬টি হাড় এবং অসংখ্য জয়েন্ট রয়েছে। এগুলোকে সক্রিয় না রাখলে শরীর দুর্বল হবেই। ডিজিটাল জীবনে বসে থাকা, এক জায়গায় আটকে থাকা, শরীর নাড়াচাড়া না করাই আসল ক্ষতির কারণ।”
তিনি আরও উদাহরণ দিয়ে বলেন, “আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ৮৫ বছর বয়সেও কাজ করে যাচ্ছেন, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ সাহেব ৮৬ বছর বয়সেও নিরলসভাবে মানুষের জন্য কাজ করছেন। তাহলে আপনি কেন ৫০-৬০ বছর বয়সেই নিজেকে অসহায় ভাবছেন?”
এই চিকিৎসক আরও বলেন, “আসুন আমরা ‘হাড় ক্ষয়’ শব্দটিকে ভয় পাই না। বরং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের অভ্যাস গড়ে তুলি। সুষম খাদ্য খাবো, রোদে যাব, পর্যাপ্ত পানি পান করব এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করব। তবেই শরীর থাকবে ফিট, মন থাকবে চাঙ্গা।”
তিনি সকল বয়সী মানুষকে আহ্বান জানান—সিঁড়ি দিয়ে উঠুন, হাঁটাহাঁটি করুন, লিফট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, হালকা ব্যায়াম করুন এবং আতঙ্ক নয়, সচেতনতা দিয়ে জীবনকে গড়ুন।
ইমরান