ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নবজাতকের যে ভিটামিনের ঘাটতি অটিজম ও সিজোফ্রেনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২০ মে ২০২৫; আপডেট: ১০:৫৫, ২০ মে ২০২৫

নবজাতকের যে ভিটামিনের ঘাটতি অটিজম ও সিজোফ্রেনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়

ছবিঃ সংগৃহীত

নবজাতক অবস্থায় শরীরে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি থাকলে ভবিষ্যতে অটিজম, সিজোফ্রেনিয়া ও এডিএইচডি (ADHD)-র মতো মানসিক বিকার ও স্নায়ুবিক সমস্যার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়—এমনটাই উঠে এসেছে একটি বড় পরিসরের গবেষণায়। গবেষণাটি করেছে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ‘ব্রেইন ইনস্টিটিউট’-এর অধ্যাপক জন ম্যাকগ্রাথের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল।

এই গবেষণায় ডেনমার্কের ৭১,৭৯৩ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়, যাদের অনেকেরই শৈশব বা কৈশোরে কোনো না কোনো মানসিক রোগ নির্ণয় হয়েছিল।

অধ্যাপক ম্যাকগ্রাথ বলেন, “আমরা দেখতে পেয়েছি যেসব শিশু জন্মের সময় ভিটামিন-ডি’র মাত্রায় ঘাটতি নিয়ে জন্মায়, তাদের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD), এবং ADHD হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।”

গবেষণায় মোট ছয়টি মানসিক রোগ বিশ্লেষণ করা হয়—মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, ADHD, ASD এবং অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা।

গবেষণার মূল কিছু দিক:

মানসিক রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি: নবজাতকদের শরীরে ভিটামিন-ডি’র পরিমাণ কম থাকলে পরবর্তী জীবনে ADHD, অটিজম এবং সিজোফ্রেনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিশ্বব্যাপী ঘাটতি: গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ভিটামিন-ডি ঘাটতি একটি সাধারণ সমস্যা।

প্রতিরোধের সম্ভাবনা: গর্ভাবস্থায় ও শৈশবে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে পরবর্তীতে মানসিক বিকার হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পেতে পারে।

অধ্যাপক ম্যাকগ্রাথ বলেন, “ভিটামিন-ডি একটি নবজাতকের মস্তিষ্কের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গর্ভকালীন ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্টেশন ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “যেভাবে গর্ভাবস্থায় ফোলেট গ্রহণ করাকে স্পাইনা বিফিডার ঝুঁকি কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়, ঠিক তেমনভাবেই ভিটামিন-ডি’র সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করাও শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়ক হতে পারে।”

গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে প্রখ্যাত মেডিকেল জার্নাল *The Lancet Psychiatry*-তে। এটি ডেনমার্কের *iPSYCH Study* নামক একটি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা প্রকল্পের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সম্পন্ন হয়।

ভিটামিন-ডি মূলত সূর্যালোক থেকে পাওয়া যায়, তবে এটি কিছু খাবার এবং সাপ্লিমেন্ট থেকেও গ্রহণ করা সম্ভব।

গবেষণাটি অর্থায়ন করেছে ডেনিশ ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন, কুইন্সল্যান্ড সেন্টার ফর মেন্টাল হেলথ রিসার্চ এবং ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড।

মুমু

×