
বিশ্বজুড়ে সাধারণ ধারণা, শারীরিক দিক থেকে পুরুষরাই শক্তিশালী। তবে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে এক ভিন্ন কথা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নারীরা শারীরিকভাবে পুরুষদের চেয়েও বেশি সহনশীল এবং সক্ষম।
নারীদের ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা, দীর্ঘায়ু, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং শারীরিক সহনশীলতা—এই চারটি ক্ষেত্রে তারা পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
১. ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা
২০২৪ সালের জুনে প্রকাশিত Jpain.org -এর গবেষণায় দেখা যায়, পেশাদার নারী ক্রীড়াবিদদের ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা পুরুষদের সমান, এমনকি অনেক সময় বেশি। Scirp.org-এ ২০১৬ সালের আরেকটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, নারী ক্রীড়াবিদরা অনেক সময় চোট পাওয়ার পরও খেলা চালিয়ে যান, যা তাদের মানসিক দৃঢ়তা এবং শারীরিক সহ্যশক্তির পরিচায়ক।
২. দীর্ঘায়ু
নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন। এর পেছনে রয়েছে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন। পুরুষদের ‘ওয়াই ক্রোমোজোম’ সময়ের সঙ্গে দুর্বল হতে পারে, যা হৃদরোগ ও ক্যানসারের মতো গুরুতর রোগের আশঙ্কা বাড়ায় এমনটি উঠে এসেছে Pmc.ncbi.nlm.nih.gov-এ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের গবেষণায়।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
Nature.com-এ প্রকাশিত ২০১৬ সালের গবেষণায় জানানো হয়, নারীদের ‘এস্ট্রোজেন’ হরমোন এবং দ্বিগুণ এক্স ক্রোমোজোম থাকার কারণে তাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষদের তুলনায় শক্তিশালী হয়। এটি ভাইরাস ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে।
৪. শারীরিক সহনশীলতা
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন পরিচালিত ২০২২ সালের গবেষণায় দেখা যায়, দীর্ঘমেয়াদে নারীদের হৃদযন্ত্র এবং রক্তনালীর অবস্থা পুরুষদের তুলনায় ভালো থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম করা নারী ক্রীড়াবিদদের ভাসকুলার সিস্টেম বয়সের তুলনায় অনেক তরুণ থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
এই গবেষণাগুলো আমাদের বুঝিয়ে দেয় নারীদের শারীরিক গঠন, হরমোন এবং অভ্যাসগত দিকগুলো তাদের অনেকক্ষেত্রেই পুরুষদের চেয়ে বেশি সহনশীল করে তোলে। তবে গবেষণাগুলো আরও গভীর বিশ্লেষণ দাবি করে এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের বিষয়ে পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মিমিয়া