
ছবি: জনকণ্ঠ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.নাসির আহমেদ সাথে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এবিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৯) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। আজ শনিবার ঘটনার বিস্তারিত জানাজানি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর প্রাঙ্গণে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. নাসির আহমদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং বাকবিতন্ডা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, শান্ত চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সাথে গল্প করছিলেন শিক্ষক নাসির আহমদ। ঐ সময়ে উপস্থিত হন প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী। কথা বলার এক পর্যায়ে শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমদ স্যার প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত সেকেন্ড অডিটরিয়ামের কাযক্রম সম্পর্কে জানতে চান। এসময় তিনি নাসির স্যারের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণ শুরু করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক জানায়, তিনি দ্বিতীয় অডিটরিয়ামের দেখভালের দায়িত্বে আছেন প্রশাসনিকভাবে। তিনি ওই কমিটির একজন সদস্য। তবে তাকে কিছু না জানিয়েই প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী অডিটরিয়ামের আসবাবপত্র ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করেন।
এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষক প্রধান প্রকৌশলীকে বলেন টেন্ডারটি ছাড়ার আগে আপনি অন্তত আমাকে জানাতে পারতেন একটা মিটিং কল করতে পারতেন। কিন্তু আপনি আমাকে কিছুই বললেন না। কিছুই জানালেন না। এই সময়ে প্রধান প্রকৌশলী উচ্চস্বরে উত্তর দেন আমি কি আপনার দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঘুরবো? এইসময়ে ঐ শিক্ষক বলেন আমিতো আপনাকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে বলিনি। আপনি তো একবার জানাতে পারতেন। এর উত্তরে প্রধান প্রকৌশলী বলেন যাকে জানানোর তাকে জানিয়েছি। এত কথার কৌফিয়ত দিতে পারবো না। কথা বলার এক পর্যায়ে ওই কর্মকর্তা শিক্ষককে বলেন, আমি আমার মতো করছি যা করার করেন। এসময় আশেপাশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা হতবাক হয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন।
এঘটনার সময়ে উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বলেন, উনি যেভাবে ওই শিক্ষকের সাথে আচরণ করলো ভিসিও হয়তো এভাবে গরম দিয়ে কথা বলে না। নাসির স্যার ভদ্র বিধায় কিছু বলে নাই। তবে ঘটনাটি খুবই দৃষ্টিকটু।
এঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক নাসির আহমেদ বলেন, আমি খুবই ভদ্রভাবে তাকে বলি আপনিতো এটা করলেন আমাকে জানালেনও না। তবে তিনি আমার সাথে যে আচরণ করলেন তা প্রত্যাশিত নয়। খুবই লজ্জাজনক।
এঘটনা সম্পর্কে প্রশাসনকে লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান প্রকৌশলী হেলালউদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, “দুজনের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল মাত্র। আমরা একসঙ্গে বসে বিষয়টি আন্তরিকভাবে মীমাংসা করেছি। এ নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, “আমি দুজনকে ডেকে বিষয়টি আন্তরিকতার সহিত মীমাংসা করে দিয়েছি। এক জায়গায় একসঙ্গে থাকতে গেলে মাঝেমধ্যে রাগ-অভিমান হতেই পারে। কিন্তু সেটি বড় করে না দেখে আমরা বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম বলেন, এবিষয়টা আমার কানে এসেছে, বেশি কিছু জানি না। বিস্তারিত জানতে হবে। এবিষয়ে কথা বলবো। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিহাব